জাতিসংঘকে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ বিএনপির
গণতন্ত্র, মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার, বিচার ব্যবস্থা ও সংসদসহ সমগ্র রাষ্ট্রব্যবস্থা জিম্মি হয়ে পড়েছে উল্লেখ করে তা উদ্ধারে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাকে ‘ন্যায়সঙ্গত পদক্ষেপ’ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে বিএনপি। দলটির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ আজ বুধবার এক বিবৃতিতে এ অনুরোধ জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সার্বভৌম সংসদ ও গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনের মিছিলে প্রতিদিন সরকারি পেটোয়া পুলিশ বাহিনী বুলেটে চালিয়ে ক্ষতবিক্ষত করছে আন্দোলনকারীদের। প্রচারমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করে, কুক্ষিগত বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে শেখ হাসিনা তাঁর অবৈধ শাসন চালিয়ে যাওয়ার যে সংকল্প নিয়েছে তাতে এই রাষ্ট্র গঠনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ও আপামর জনসাধারণের সব স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হতে বসেছে।’
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের ইতিহাস সাংবিধানিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার ইতিহাস উল্লেখ করে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যবসায়ী অবৈধ আওয়ামী সরকার মুক্তিযুদ্ধের সব আকাঙ্ক্ষা ও অর্জনকে বিনষ্ট করে জাতির ভবিষ্যৎ অধিকারকেও হরণ করেছে। বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে (অনুচ্ছেদ-৭ বি) সংবিধানের প্রায় এক তৃতীয়াংশকেই অপরিবর্তনযোগ্য করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো সংসদই পরবর্ত্তী সংসদের হাত-পা বেঁধে দিতে পারে না।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গুলি করে লাশ ফেলে রাখা হচ্ছে খালে-বিলে-বেড়িবাঁধে। ক্রসফায়ারের ধরন পাল্টে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট করে হত্যা করা হয়েছে যশোরের মনিরামপুরের ইউসুফ ও লিটনকে। দুই পায়ে গুলি করে চিরতরে পঙ্গু করা হয়েছে ঢাকা কলেজের শিবির নেতা আবদুল হামিদকে, মোহাম্মদপুরের জামায়াত নেতা নাজমুল হাসান ও আবুল কাশেমকে। অসংখ্য বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীকে প্রতিদিন গুম, খুন ও অপহরণ করা হচ্ছে দেশব্যাপী।’
সালাহ উদ্দিন আহমেদ আরো অভিযোগ করেন, ‘পুলিশি শাসন ও নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থার কল্যাণে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদসহ সব সিনিয়র নেতাকে দিনের পর দিন মিথ্যা মামলায় রিমান্ডে এনে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। এসব বেআইনি রিমান্ড বন্ধ করে তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তি প্রদানের দাবি জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাজিমুদ্দিন আহমেদ ও আশরাফ উদ্দিন নিজানকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ‘সব রাজবন্দির’ মুক্তি দাবি করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আবাসস্থল গুলশান কার্যালয়ে অবিলম্বে টেলিফোন, ফ্যাক্স, ইন্টারনেট, ব্রডব্যান্ড ও ক্যাবল সংযোগসহ সব যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃস্থাপনের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু বোবা সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি। আমরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সব মানবাধিকার সংস্থা, সংগঠন ও মানবাধিকার কর্মীদের গুলশান কার্যালয়ের পরিস্থিতি পরিদর্শন, পর্যবেক্ষণ ও অনুধাবন করে বিশ্বের কাছে তা তুলে ধরার আহ্বান জানাই।’