পাবনায় অবহেলায় পড়ে আছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ঐতিহাসিক ‘ডাববাগান যুদ্ধ দিবস’ আজ ১৯ এপ্রিল। একাত্তর সালের এই দিনে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে ৫০ জন পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করেন মুক্তিযোদ্ধারা। স্থানীয়ভাবে দিবসটি পালন করা হলেও আজও সরকারিভাবে পালন করা হয় না ঐতিহাসিক এই দিবসটি।
শহীদ এই মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিকে ধরে রাখতে ২০০১ সালে তৎকালীন ডাববাগান ও বর্তমান শহীদনগরে ‘বীরবাঙালি’ নামে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়। ওই বছরের ১৯ এপ্রিল স্মৃতিসৌধটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ। সময়ের আবর্তে স্মৃতিসৌধটি অযত্ন-অবহেলায় অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। সরেজমিনে দেখা যায়, স্মৃতিসৌধটির চারপাশে ঘাস আর আগাছায় জঙ্গল হয়ে গেছে। অর্ধ সমাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে সীমানাপ্রাচীর। আর ফটকের একটি অংশ গায়েব হয়ে গেছে।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একাত্তরের ১৯ এপ্রিল দুপুরে নগরবাড়ী ঘাট হয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর সেনারা বগুড়া যাওয়ার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে মুক্তিবাহিনী সাঁথিয়া উপজেলার ডাববাগানে অবস্থান নেন। এ সময় পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধ হয়। সম্মুখযুদ্ধে টিকতে না পেরে এবং ব্যাপক হতাহতের পর পিছু হটে নগরবাড়ী ফিরে যায় পাক বাহিনী। ওই দিনের যুদ্ধে প্রায় ৫০ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়।
এই সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের (ইপিআর) হাবিলদার মমতাজ আলী, হাবিলদার আব্দুর রাজ্জাক, নায়েক হাবিবুর রহমান, সিপাহি এমদাদুল হকসহ অন্তত ১৭ জন।
স্থানীয়ভাবে মুক্তিযোদ্ধারা দিবসটি স্মরণে কিছু অনুষ্ঠান করলেও সরকারিভাবে কোনো কর্মসূচি পালন করা হয় না। এ অবস্থায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা স্মৃতিসৌধটির রক্ষণাবেক্ষণ ও দিবসটি সরকারিভাবে পালনের দাবি জানিয়েছেন।