‘জঙ্গি’ শফিউলের লাশ মায়ের কাছে হস্তান্তর
ময়মনসিংহের নান্দাইলে র্যাবের কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ‘জঙ্গি’ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার দেবীপুর গ্রামের শফিউল ইসলামের লাশ আজ শনিবার তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
লাশ নিতে যাওয়া শফিউলের মা নার্গিস সুলতানা আজ শনিবার বিকেলে মুঠোফোনে ছেলের লাশ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ছেলের লাশ নিয়ে তাঁরা ঘোড়াঘাটের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
গত ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহের অদূরে আজিমুদ্দিন স্কুলের পাশে পুলিশ সদস্যদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায় জঙ্গিরা। হামলার ঘটনায় পুলিশের দুই সদস্য নিহত হন। পরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ‘জঙ্গি’ আবির রহমান নিহত ও মাদ্রাসার ছাত্র শফিউল ইসলাম আহত হন। এ ছাড়া বন্দুকযুদ্ধ চলাকালে স্থানীয় এক গৃহবধূ ঘরে থাকাবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শফিউলকে আটক করে। পরে এ ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ ও ছবি বের হলে দেখা যায়, আবির ও শফিউল পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, পরে অস্ত্র নিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছে।
ওই ঘটনার পর শফিউলকে র্যাবের হেফাজতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
র্যাব-১৪ ময়মনসিংহের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শরীফুল ইসলাম জানান, ঈদের দিন পুলিশের গুলিতে আহত জঙ্গি শফিউলকে ময়মনসিংহে চিকিৎসা শেষে কিশোরগঞ্জ ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। পথে কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ সড়কের ঘোষপাড়া ডাংরি এলাকায় পৌঁছামাত্র সন্ত্রাসীরা র্যাবকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলি করে জঙ্গি শফিউলকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় র্যাব পাল্টা গুলি করলে অজ্ঞাত এক হামলাকারী গুরুতর আহত হয়। বাকিরা পালিয়ে যায়। হামলার সময় র্যাবের মাইক্রোবাসে থাকা জঙ্গি শফিউল গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে আহত শফিউল ও অপরজনকে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
শফিউলের লাশ তাঁর পরিবারের সদস্যরা নিলেও শোলাকিয়ার হামলায় নিহত আরেক জঙ্গি আবির রহমানের লাশ নিতে তাঁর পরিবার অস্বীকৃতি জানায়। এরপর পুলিশের উদ্যোগে গত ১১ জুলাই আবিরকে কিশোরগঞ্জ পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাজার নামাজ পড়েন কবরস্থানের তত্ত্বাবধায়ক মাওলানা মাহতাব উদ্দিন। এ ছাড়া আর কেউ জানাজায় অংশ নেননি।