পরিবারের দাবি বিএসএফের হত্যা, বিজিবির না
ভারতের সীমান্তবর্তী ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসান (১৬) নামের এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
হাসান উপজেলার বাকশপোতা গ্রামের ভ্যানচালক মো. জাহাঙ্গীরের ছেলে। সে স্থানীয় খোশালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ত। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে মহেশপুর থানা পুলিশ।
পরিবারের দাবি, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে হাসান নিহত হয়েছে। কিন্তু বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ৬-এর পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়েছে, ঘটনাটি সঠিক নয়।
মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, বাবার সাথে রাগ করে খোশালপুর গ্রামে মিজানুর রহমানের বাড়িতে যায় হাসান। সেখান থেকে গরু আনতে ভারতে যায় সে। গরু নিয়ে পাশের বাড়ির রবিউলের সঙ্গে ফিরে আসার সময় ভারতীয় এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়। এরপর সঙ্গীরা তাকে নিয়ে নদী পার হয়ে বাংলাদেশ সীমান্তের খোশালপুর গ্রামের ঘুনার মাঠে একটি ধানক্ষেতে আশ্রয় নেয়। সেখানেই মারা যায় হাসান। রাতেই নিজ বাড়িতে তার লাশ নেওয়া হয়।
এর আগে ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলতাফ হোসেন এনটিভি অনলাইনকে জানান, মহেশপুরের বাকশপোতা গ্রাম থেকে এক স্কুলছাত্রের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ভারত থেকে গরু আনার সময় বাংলাদেশ সীমানায় বিএসএফের গুলিতে হাসান নিহত হয়। তদন্তের পরে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ১১টার পর ওই এলাকায় ঝড় হয়। এই সুযোগে তিন-চারজন গরু ব্যবসায়ী হাসানকে সঙ্গে নিয়ে ভারতের রামনগর বিএসএফ ক্যাম্পের কাছাকাছি যায়। এ সময় টহলরত বিএসএফ জওয়ানরা সার্চলাইটের আলোতে বাংলাদেশিদের দেখতে পেয়ে ধাওয়া করে। বিপদ টের পেয়ে হাসানসহ অন্যরা সীমান্তের ৬৩ নম্বর পিলারের কাছ দিয়ে নদী পার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। এ সময় নিরাপদ মনে করে ভিজে যাওয়া কাপড় খুলছিল হাসান। তখনই কাছ থেকে বিএসএফ জওয়ানরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে তার মাথার খুলি উড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। পরে সঙ্গে থাকা অন্যরা হাসানের লাশ সীমান্ত থেকে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার দূরে নিজ বাড়ি বাকশপোতা গ্রামে পৌঁছে দিয়ে সটকে পড়ে। রাতে পুলিশ এ খবর জানতে পারে।
সকালে বিজিবির বাঘাডাঙ্গা ক্যাম্পের নায়েক ইসমাইল হোসেন নিহতের বাড়িতে যান। তিনি জানান, ঘটনার দিন বাবার সঙ্গে ঝগড়া হয় হাসানের। এর পর সে বাড়ি থেকে চলে যায়। রাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় সে । তবে কীভাবে ঘটনাটি ঘটেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি তিনি।