একটি দুর্ঘটনায় থমকে গেছে সুমাইয়ার জীবন
কিছুদিন আগেও কিশোরীটি সহপাঠীদের সঙ্গে খেলাধুলা আর আনন্দ-হাসিতে মেতে থাকত। লেখাপড়ায়ও ভালো ছিল। ইচ্ছা ছিল, বড় চিকিৎসক হওয়ার। কিন্তু আকস্মিক এক দুর্ঘটনায় থমকে গেছে তাঁর জীবন।
বরগুনার আমতলী উপজেলার এ কে পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া (১২)। চলতি বছরের ১০ মে বাড়ির কাছাকাছি একটি দোতলা ভবনের ছাদে খেলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সে। এর পর তার হাঁটুর নিচ থেকে একটি পা কেটে ফেলতে হয়েছে।
বিদ্যুৎস্পৃষ্টে পুড়ে গেছে সুমাইয়ার ডান কাঁধের একটি অংশের হাড়। এখনো শুকায়নি তার পোড়া ঘা।
সুমাইয়ার মা হামিদা (৩৭) বেগম বলেন, ‘তরতাজা মাইয়াডার এমন ফ্যালফ্যাল কইরা চাইয়া থাহা (নির্বাক তাকিয়ে) আর দ্যাখতে পারি না। যেডু (যেটুকু) জমি আছেলে, সব ব্যাচা শ্যাষ। এহনও চিকিৎসার কিছু অয় নায়। ঘোচে নায় পোড়া ঘাও।’
বরগুনার আমতলী উপজেলার কচুপাত্রা গ্রামের দরিদ্র রাজমিস্ত্রি শামীম হাওলাদার (৪৫) সুমাইয়ার বাবা। বর্তমানে তিনি কাজ করছেন ঢাকার একটি স্টিল মিলে।
শামীম হাওলাদার বলেন, ‘অতটুকু মাইয়ার কষ্ট দেইখা আর সইতে পারি না। কই যামু কী, করমু কইতে পারি না। মাঝে মাঝে মনে হয় বিষ খাইয়া মইরা যাই।’
সুমাইয়ার চিকিৎসার পাশাপাশি তাঁকে পড়াশোনার স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনতে যে অর্থের প্রয়োজন তা নেই দরিদ্র বাবা শামীম হাওলাদারের।
বিষয়টি অবগত হয়ে সুমাইয়ার চিকিৎসা ও পড়াশোনার জন্য স্থানীয় বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু। তিনি বলেন, সবাই মিলে পাশে দাঁড়ালে সুমাইয়া সুস্থ হয়ে উঠবে। তার পড়াশোনাও চলবে।
ঝন্টু বরগুনার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ স্থানীয় সচ্ছল ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি তহবিল গঠন করার কথা বলেন।