যানজটমুক্ত পথে বাড়ি ফিরছে উত্তরবঙ্গের মানুষ
টানা কয়েকদিনের অসহনীয় যানজটের পর ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক এখন অনেকটাই ফাঁকা। যানবাহনের তেমন কোনো চাপ নেই। আজ সোমবার ঈদের আগের দিন যানজটমুক্ত পরিবেশে বাড়ি ফিরছে মানুষ।
এ মহাসড়কে উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলাসহ ২২টি জেলার মানুষ ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ঘরে ফিরছে। অথচ অতিরিক্ত গাড়ির চাপে গত কয়েকদিন যানজটে ভোগান্তির সীমা ছিল না যাত্রীদের। আজ যেন উল্টো চিত্র বিরাজ করছে। ফাঁকা রাস্তা পেয়ে একদিকে যাত্রীরা যেমন খুশি, তেমনি টানা কয়েকদিন মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করে ক্লান্ত পুলিশও যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে।
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কয়েকদিন ধরেই এই মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট ছিল। আর এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে দূরপাল্লার যাত্রীদের। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ, ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও ঘন ঘন সড়ক দুর্ঘটনার কারণে বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কের টাঙ্গাইলের প্রায় ৬৫ কিলোমিটারজুড়েই যানজটের সৃষ্টি হয়। অসহনীয় এ যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হয় ঘরমুখো যাত্রীদের। আজ যেন উল্টো চিত্র হয়ে ধরা দিয়েছে যাত্রীদের কাছে।
সোমবার সকালে টাঙ্গাইল শহর বাইপাসে একটি খাবার হোটেলে নাশতা করছিলেন রিজিয়া ব্গেম। তিনি পরিবার নিয়ে দিনাজপুর যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘সত্যিই ভাবতে পারিনি যে রাস্তা এতটা ফাঁকা পাওয়া যাবে। মনেই হচ্ছে না যে এটা সেই আগের মহাসড়ক।’ একই বাসের যাত্রী সুলতানা জামান জানান, তিনি গণমাধ্যমে যানজটের চিত্র দেখে গ্রামে যাওয়ার কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিয়েছিলেন।
ফাঁকা সড়কে গাড়ি চালিয়ে অনেকটা খুশি চালকরাও। ঢাকা থেকে ফিরে আসা উত্তরবঙ্গগামী পশুবাহী এক ট্রাকের চালক জানান, রাস্তায় প্রচুর গাড়ি চলছে আজও। কিন্তু কোনো যানজট নেই। রাস্তা অনেকটাই ফাঁকা মনে হচ্ছে। এ অবস্থায় ওভারটেকিং-এর প্রবণতা দেখা দিয়েছে অনেক চালকের মাঝে।
ঘরমুখো মানুষকে যানজটমুক্ত ও নিরাপদে পৌঁছে দিতে টাঙ্গাইলের পুলিশ বিভাগ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মাহবুব আলম জানান, প্রায় ৮০০ পুলিশ সদস্য এ মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশের ৬৪ কিলোমিটারে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া ১০টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে মহাসড়ক নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তিনি জানান, গত চারদিনে এক লাখ পাঁচ হাজার যানবাহন বঙ্গবন্ধু সেতু পারাপার হয়েছে। যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড বলেও জানান পুলিশ সুপার।