এমপির মেয়ের বিয়েতে ‘গরমে’ মেহমানের মৃত্যু
নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় আজ শনিবার স্থানীয় সংসদ সদস্যের মেয়ের বিয়ের প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানে ফজলু মিয়া নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত ভিড়ে মাটিতে পড়ে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
খাবার খেয়ে বের হওয়ার পর হিটস্ট্রোকে ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয় বলে দাবি করেছেন নরসিংদী-৩ (সদর ও শিবপুর) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা। আর শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ইমাম হোসেনের দাবি, অতিরিক্ত গরমের মধ্যে ফজলু মিয়া গরুর মাংস বেশি খাওয়ায় অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কয়েকদিন আগে সংসদ সদস্য ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লার মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এ জন্য আজ শনিবার দুপুর আড়াইটায় উপজেলার বাজনাব আবুল ফায়েজ মোল্লা উচ্চ বিদ্যালয়ে বিবাহোত্তর প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে দুপুর দেড়টা থেকে স্কুল মাঠের প্যান্ডেলে লোকসমাগম হতে শুরু করে। প্রচুর ভিড় হওয়ায় একপর্যায়ে খাবার টেবিলে বসার জন্য অতিথিদের মধ্যে হুড়োহুড়ি লেগে যায়।
প্রথম ধাপের খাবার শেষ হওয়ার পর প্যান্ডেলের গেটের সামনে খুব জটলা সৃষ্টি হয়। সবাই একসাথে প্যান্ডেলে ঢোকার চেষ্টা করেন। ভিড়ের মধ্যে উপজেলার ব্রাহ্মন্দী গ্রামের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব মো. ফজলু মিয়া অসুস্থ হয়ে যান। কয়েকজন মাটিতে পড়ে গিয়েও আহত হন। তাদের সাথে সাথে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ফজলু মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানে সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামজিক সংগঠনের নেতাকর্মীসহ প্রায় ১৫ হাজার মানুষ অংশ নেন।
শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আবু সাইদ এনটিভি অনলাইনকে জানান, প্রচণ্ড গরমে ফজলু মিয়ার মৃত্যু হতে পারে। চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ইমাম হোসেন জানান, অতিরিক্ত গরমের মধ্যে ফজলু মিয়া বেশি গরুর মাংস খাওয়ার কারণেই হয়তো অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হিটস্ট্রোকে মারা যান। ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাঁর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সন্ধ্যায় তাঁকে দাফন করা হয়েছে।
সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা। আমি গ্রামের মানুষকে ভালোবেসে দাওয়াত করেছিলাম। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি, খাবার খেয়ে বের হওয়ার পর হিটস্ট্রোকে তিনি মারা গেছেন।’