টাঙ্গাইলে নিহত রাবি শিক্ষার্থীর লাশ নিলেন বাবা
টাঙ্গাইলে র্যাবের জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত দুজনের মধ্যে একজনের লাশ গ্রহণ করেছে তাঁর পরিবার। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে নিহত আহসান হাবিব শুভর (২৪) লাশ গ্রহণ করেন তাঁর বাবা আলতাফ হোসাইন।
এর আগে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে ছেলের লাশ শনাক্ত করেন আলতাফ হোসাইন। আহসান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। ২০১৪ সালে তৃতীয় বর্ষে থাকার সময় ক্লাস-পরীক্ষা না দেওয়ায় তিনি ড্রপ-আউট হন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সভাপতি ড. এ এফ এম মাসউদ আখতার। আহসান হাবিব শুভর বাড়ি নওগাঁর রানীনগর উপজেলার রাজাপুর গ্রামে।
নিহতের বাবা আলতাফ হোসেন জানান, তাঁর ছেলে গত বছরের জুন মাস থেকে নিখোঁজ ছিল। অনেক চেষ্টা করেও তাঁর কোনো খোঁজ পাননি তাঁরা। সর্বশেষ অনেক চেষ্টার পর তাঁর ফোন নম্বর বের করে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।
আলতাফ হোসেন বলেন, ‘যদি আমার ফোন ধরতো তাহলে কোনো জঙ্গি আমার ছেলেকে আটকে রাখতে পারত না। আমি তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতাম।’
টাঙ্গাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের কাছে পরিবারের লোকজন এলে হাসপাতাল হিমঘরে লাশ রাখা আছে বলে জানাই। হস্তান্তর কপিতে স্বাক্ষর করে আহসান হাবিবের বাবা লাশ বুঝে নেন।’
এদিকে র্যাব ১২-এর কোম্পানি কমান্ডার মহিউদ্দিন ফারুকী সাংবাদিকদের জানান, নিহত জঙ্গি আহসান হাবিব শুভর বাড়ি নওগাঁর রানীনগর উপজেলার রাজাপুর গ্রামে। শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়ে বলা হয়েছে, নওগাঁ কেডি স্কুল থেকে এসএসসি, নওগাঁ সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে সর্বশেষ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে পড়ত।
এর আগে ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর গোদাগাড়ী মডেল থানায় (মামলা নম্বর ১৭) অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে আহসান হাবিব শুভ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। পরে ২০১৫ সালের মে মাসে জামিনে ছাড়া পান তিনি। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। শুভর নিখোঁজের ব্যাপারে তাঁর বাবা আলতাফ হোসেন ২০১৫ সালের ৭ জুলাই রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
গত ৮ অক্টোবর সকালে টাঙ্গাইল পৌর এলাকার কাগমারা মির্জামাঠ এলাকায় র্যাবের অভিযানে নিহত হন দুই জঙ্গি। তাঁরা ওই এলাকার একটি তিনতলা বাসার নিচতলায় ছাত্র পরিচয়ে ভাড়া নিয়ে জঙ্গি কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন। এ সময় সেখান থেকে একটি রিভলবার, একটি পিস্তল, ১২টি গুলি, ১০টি চাপাতি, দুটি ল্যাপটপ ও ৬৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।