কুয়াকাটায় রাসমেলা শুরু
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা ও পুণ্যস্নান উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত থেকে অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় রাস উৎসব।
আজ রোববার সকাল থেকে কুয়াকাটা সৈকতে পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেছেন। বিকেলে এ এলাকা লাখো মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হবে বলে মনে করছে রাস উদযাপন কমিটি।
আনুমানিক দুইশ বছর ধরে প্রতিবছর পূর্ণিমার তিথিতে রাসমেলা আয়োজন করা হয়। এ মেলায় হিন্দু পুণ্যার্থীদের পাশাপাশি লক্ষাধিক মানুষের কুয়াকাটায় আগমন ঘটে থাকে।
রাসমেলা ও সৈকতে পুণ্যস্নানকে ঘিরে কুয়াকাটা রাস উদযাপন কমিটিকে সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে জেলা প্রশাসন, পৌরসভা, ট্যুরিস্ট পুলিশসহ বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান।
রাসমেলায় আগতদের সুবিধা ও নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এরই মধ্যে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক এ কে এম শামিমুল হক সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ওই সভায় জেলার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে কুয়াকাটা রাস উদযাপন কমিটিকে নিয়ে কুয়াকাটা পৌরসভায় প্রশাসন, রাজনীতিক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজনের উপস্থিতিতে আরো একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। কুয়াকাটা পৌর মেয়র আবদুল বারেক মোল্লার সভাপতিত্বে ওই সভায় কলাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব তালুকদার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম সাদিকুর রহমান, কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সিনিয়র এএসপি মীর ফসিউর রহমান, কুয়াকাটা প্রেসক্লাব সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লবসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
রাসমেলায় আগতদের থাকা-খাওয়া নির্বিঘ্ন করতে আবাসিক হোটেল ভাড়া ও রেস্তোরাঁয় খাবারের তালিকামূল্য টাঙানো, সুপেয় পানি ও পর্যাপ্ত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং নিষিদ্ধ করে এরই মধ্যে পৌরসভা থেকে নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
সৈকতের জিরোপয়েন্ট থেকে চারদিকে দুই কিলোমিটার এলাকার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহল দেবে। আর পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় রাখার কথা জানিয়েছে কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (টিএনও) এ বি এম সাদিকুর রহমান বলেন, বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম থাকবে। রাসমেলা উদযাপন এলাকায় সিসি ক্যামেরার আওতায় রাখা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের পাশাপাশি র্যাবও থাকবে। একাধিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন।
অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার বেশি মানুষ সমাগম হবে বলে আশা করছে উপজেলা প্রশাসন ও রাসমেলা উদযাপন কমিটি।