নড়াইলে গ্রাম পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা
নড়াইলের লোহাগড়ায় গ্রাম পুলিশ সদস্য বকুল শেখকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার (২৮ মে) দিনগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের কুমড়ি গ্রামের পূর্বপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত বকুল শেখ ওই গ্রামের বদি শেখের ছেলে। তিনি উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে গ্রাম পুলিশ হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
জানা গেছে, রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুমড়ি পূর্বপাড়া রেজ্জাকের চায়ের দোকান থেকে বাড়ি ফিরছিলেন বকুল। পথে গোলাপ শেখের বাড়ির কাছে পৌঁছালে ১০ থেকে ১২ জন দুর্বৃত্ত দেশি ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত গ্রাম পুলিশের ছেলে রাকিব শেখ বলেন, ‘খুনিরা আগে থেকে ওঁত পেতে ছিল। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত বাবা তাদের নাম বলে গেছেন। কুমড়ি গ্রামের পাগল ও আয়নালের সঙ্গে আমাদের শত্রুতা ছিল। তারা দুজন ডাকাতি করতেন। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করলে গ্রাম পুলিশ হিসেবে বাবাকে দোষ দিতেন তাদের পরিবার। এ কারণে পাগলের ছেলে আজমল, আয়নাল, হোসেন শেখ, রুবেল, মাহমুদ ও ইয়ামিনসহ তাদের লোকজন বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী, জেলা পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন, লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর আলী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. দোলন মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘রোববার সকালে পরিষদের মিটিং ছিল। বকুল শেখ দায়িত্ব পালন করে বাড়িতে যাওয়ার পর সন্ধ্যায় তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
জেলা পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হত্যায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে। দ্রুত রহস্য উদঘাটন করে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বলেন, ‘গ্রাম পুলিশ বকুল শেখ আমাদেরই একজন সদস্য। এই ন্যক্কারজনক হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে প্রশাসন সচেষ্ট আছে। সরকারের পক্ষ থেকে বকুল শেখের পরিবারকে তাৎক্ষণিক ২৫ হাজার টাকা দাফন বাবদ দিয়েছি। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার পরিবারকে সার্বিক সহযোগিতা করব।’
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সকালে নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’