জাপান বাংলাদেশের কৌশলগত অংশীদারে পরিণত হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় জাপান বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান উন্নয়ন সহযোগী দেশ হতে একটি কৌশলগত অংশীদারে পরিণত হয়েছে।
আজ সোমবার (১৯ জুন) বাংলাদেশ ইকেবানা অ্যাসোসিয়েশনের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল রোববার দেওয়া বাণীতে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে জাপান একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ জাপান ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের অক্টোবর মাসে জাপান সফর করেন। সেই সফরের মধ্য দিয়ে দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের শক্তিশালী ভিত্তি রচিত হয়। তখন থেকেই জাপান বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তাছাড়া নিয়মিত সংস্কৃতি ও বিভিন্ন পর্যায়ে সফর বিনিময়ের মাধ্যমে দু’দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক দিনে দিনে নতুন মাত্রা লাভ করছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ইকেবানা অ্যাসোসিয়েশন এবং ঢাকাস্থ জাপান দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মিলনায়তনে’ বাংলাদেশ ইকেবানা অ্যাসোসিয়েশনের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপিত হচ্ছে জেনে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত।
ইকেবানা অত্যন্ত নান্দনিক ও সৃজনশীল উপায়ে ফুল সাজানোর প্রাচীন জাপানি পদ্ধতি হিসেবে সারা বিশ্বে সুপরিচিত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদেরও রয়েছে হাজার বছরের বাঙালি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। ইকেবানা সংস্কৃতিকে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতিতে প্রচার করার লক্ষ্যে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে স্থাপিত জাপান দূতাবাসের সহযোগিতায় ১৯৭৩ সালে ইকেবানার ছোট ছোট সংগঠনগুলোকে একত্রিত করে একটি জাতীয় ফোরাম হিসেবে বাংলাদেশ ইকেবানা অ্যাসোসিয়েশন তাদের কার্যক্রম শুরু করে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে স্মরণ করছি, আমার ছোট বোন শেখ রেহানা ১৯৭৪ সালে ইকেবানা প্রথম ব্যাচের একজন শিক্ষার্থী ছিলেন। শুধু গৃহকোণের সৌন্দর্যই নয়, ইকেবানা মানব মনের আত্মিক ও আধ্যাত্মিক সৌন্দর্যেরও প্রস্ফুটন ঘটায়। বাংলাদেশ ইকেবানা অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠার পর থেকে ফুলপ্রেমীদের যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমাদের দেশে সামাজিক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ ইকেবানা অ্যাসোসিয়েশন শুধু জাপানি পদ্ধতিতে ফুল সাজানো প্রশিক্ষণ কর্মকাণ্ডের মধ্যেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখেনি। সংগঠনটি দুই দেশের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের আদান প্রদানের পাশাপাশি বাংলাদেশ ও জাপানের বন্ধুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারেও অগ্রণী ভূমিকা রেখে আসছে। তারই অংশ হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানটি ২০২২ সালে বাংলাদেশ-জাপান কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিও উদযাপন করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ইকেবানা অ্যাসোসিয়েশনের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান এবং প্রতিষ্ঠানটির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নেওয়া সব কর্মসূচির সার্বিক সফলতা কামনা করেন।