কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর মৃত্যুবার্ষিকী আজ
‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ গানের স্রষ্টা তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ। আজ বুধবার (২১ জুন) তাঁর ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকী।
বাংলাদেশের কবিতায় অবিসস্মরণীয় এই কবির শিল্পমগ্ন উচ্চারণ তাঁকে দিয়েছে সত্তরের দশকের অন্যতম কবির স্বীকৃতি। ১৯৯১ সালের ২১ জুন মাত্র ৩৫ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
দিনটি স্মরণে রুদ্র স্মৃতি সংসদ কবির গ্রামের বাড়ি মোংলার মিঠাখালীতে আজ সকালে কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মিলাদ মাহফিল, দোয়া ও রুদ্র স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। স্মরণসভা শেষে রুদ্রর কবিতা আবৃত্তি ও গান পরিবেশিত হবে।
রুদ্রর মৃত্যুবার্ষিকী নানা আয়োজনে পালন করবে রুদ্র সংসদ (ঢাকা), সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট (মোংলা), সিপিবি, কবিতা আবৃতি পরিষদ, পিএফজি (মোংলা), রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিরিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন।
উল্লেখ্য, অকালপ্রয়াত এই কবি নিজেকে মিলিয়ে নিয়েছিলেন আপামর নির্যাতিত মানুষের আত্মার সঙ্গে। তাই সাম্যবাদ, মুক্তিযুদ্ধ, ঐতিহ্যচেতনা ও অসাম্প্রদায়িকবোধে উজ্জ্বল তাঁর কবিতা। ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’ এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি উচ্চারণ করেছেন অবিনাশী স্বপ্ন ‘দিন আসবেই দিন সমতার’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাঁকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীকে’। একই সঙ্গে তাঁর কাব্যের আরেক প্রান্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা।
মাত্র ৩৫ বছরের জীবনে রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’সহ অর্ধ শতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন। পরবর্তীকালে এ গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির ১৯৯৭ সালে শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন। ‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দুটির জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পরপর দুই বছর মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।