আমাদের যারা ভোট চোর বলে তারা ভোট ডাকাত : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্ভাগ্য যে আমরা ভোটের জন্য এতো সংগ্রাম করলাম। অথচ আজ যারা আমাদের ভোট চোর বলে, তারা হলো ভোট ডাকাত। যাদের উত্থান হয়েছিল ডাকাতি, খুন ও হত্যা করে।
গণভবনে আজ বুধবার (২১ জুন) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সাম্প্রতিক সুইজারল্যান্ড ও কাতার সফরের ফলাফল সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সংবাদ সম্মেলন করেন। আজ বুধবার (২১ জুন) দুপুর ১২টার পরে গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার আত্মবিশ্বাস আছে। দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছি। মানুষ পছন্দ হলে ভোট দিবে, না হলে দিবে না। আমি কী মানুষের ভোট চুরি করতে যাব?’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, নির্বাচনের যখন সুনির্দিষ্ট সময় আসবে, তখন নির্বাচন হবে। একটি গণতান্ত্রিক ধারা অনেক ত্যাগ, রক্ত, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অব্যাহত রেখেছি। সবাই কী চান না গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক? গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই, দেশটি এগিয়ে গেছে। কোভিড-১৯ এর কারণে অর্থনৈতিক একটি চাপ পড়েছে, তখন তো সারা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা ছিল। এরমধ্যে মরার উপরে খাড়ার ঘাঁ হলো ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। স্যাংশন ও কাউন্টার স্যাংশন। প্রত্যেকটি জিনিসের দাম শুধু আমার দেশে না বিশ্বব্যাপী বেড়েছে এবং মূল্যস্ফীতিও বেড়ে গেছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশ ছোট্ট ভূখণ্ড কিন্তু বিশাল জনগোষ্ঠী। সবার খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা আমাদের পূরণ করতে হয়। আমাদের জনসংখ্যা যত, কিন্তু চাষাবাদের জমি সীমিত। আমরা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত রেখেছি। মূল্যস্ফীতি যেভাবে বেড়েছে, তা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছি। আমাদের হাতে যেগুলো আছে, সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। কিন্তু বাইরের থেকে যা আনা হচ্ছে তার দাম বেড়ে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করার পরে, আমার ছোট ১০ বছরের ভাইকেও ছাড়েনি তারা। তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে; বঙ্গবন্ধুর কোন রক্ত যেন এদেশের ক্ষমতায় না আসতে পারে, এই জন্যে। সেখানে আমি এই দেশের ক্ষমতায় এসেছি চার চার বার নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নতিও করেছি। আমি নিজে ক্ষমতা ভোগ করতে আসিনি, দেশের মানুষের উন্নতি করতে এসেছি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, যারা আমাদের স্বাধীনতা বিরোধী ছিল ও স্বাধীনতা খর্ব করেছিল; তারা এদেশের গণতন্ত্র হরণ করে গণতন্ত্রের প্রবক্তা সেজেছে। স্বাভাবিকভাবে তারা এদেশের কোনদিন কল্যাণ চাবে না। সেখানে ঘোলাটে পরিবেশ করতে চাইবে। আমি মনে করি আমার দেশের সচেতন নাগরিক তারা এটা গুরুত্ব কেন দিবে? তারা বিচার করবে বাংলাদেশ আজ থেকে ১২ থেকে সাড়ে ১২ বছর আগে, ২০০৯ এর আগে বাংলাদেশ কোথায় ছিল? বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা কোথায় ছিল? এই সাড়ে ১৪ বছর পরে বাংলাদেশের অবস্থা কোথায় দাঁড়িয়েছে। আমাদের সার্বিক উন্নয়ন হয়েছে কী হয়নি। দেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছি কি না। দেশের মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে কি না। আপনারা সচেতন নাগরিক এটাই তো বিবেচনা করবেন।
প্রধানমন্ত্রী গত ১৪ থেকে ১৫ জুন সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট : সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল’ শীর্ষক সম্মেলনে যোগদান শেষে গত শনিবার (১৭ জুন) দেশে ফিরেছেন। এর আগে ২৩ থেকে ২৫ মে কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত তৃতীয় কাতার ইকোনমিক ফোরামে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।