প্রেমের টানে চুয়াডাঙ্গায় এসে বিয়ে করলেন চীনা যুবক
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয়, এরপর প্রেম। আর প্রেম থেকেই চীন থেকে ছুটে আসেন সাউই চুই (২৮)। চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের গয়েশপুরের মেয়েকে করেন বিয়ে। পছন্দের সেই মানুষটি হচ্ছে ফারিয়া সুলতানা মুন (২৫), যিনি গয়েশপুর গ্রামের দিনমজুর সানোয়ার হোসেনের মেয়ে। গত ঈদুল আজহার পরের দিন ঢাকায় বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা।
ফারিয়ার বাবা সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘মোবাইলের মাধ্যমে আমার মেয়ের সঙ্গে চীনা ছেলেটির পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার পর ওই ছেলে আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চাইলে আমরা তাকে আমাদের দেশে আসতে বলি এবং সব আইন মেনে বিয়ে দিয়েছি। যদিও তারা প্রথমে ঢাকাতে বিয়ে করে। গ্রামে আসার পর আবার বিয়ে দিয়েছি।’
ফারিয়ার মা আনজু খাতুন বলেন, ‘আমরা পারিবারিকভাবে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। জামাই অনেক ভালো ও শান্ত স্বভাবের। আমার মেয়েকে চীনে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছে।’
ফারিয়া বলেন, ‘সাউই চুইয়ের সঙ্গে আমার ফেসবুকে পরিচয় হয়। পরে পরিবারের সবাই তাকে পছন্দ করে। আমার পরিবার রাজি থাকায় প্রায় আট মাস উই চ্যাটের মাধ্যমে কথাবলি। সাউই চুই আমাকে কিছু ভাষা শিখিয়ে দিয়েছিল। সেগুলো দিয়ে তার সঙ্গে আমি কথা বলেছি, বলছি। তারপরে গত ২০দিন আগে আমাদের বিয়ে হয়। তিনি সবকিছু মানিয়ে নিতে চেষ্টা করেন। ভাষাগুলো শিখতে আমার আরও সময় লাগবে। আমি চেষ্টা করছি। কিছুদিনের মধ্যে সব প্রক্রিয়া শেষ করে আমাকে চীনে নিয়ে যাবেন। আমি টুকটাক কথা বাংলায় বললে ওনি বুঝতে পারেন। তা ছাড়া গুগল ট্রান্সলেটর ব্যবহার করে কথা বলি। খুব দ্রুত চীনা ভাষা শিখে যাব।’
সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইসাবুল ইসলাম মিল্টন বলেন, ‘চীন থেকে এসে এক যুবক গয়েশপুর গ্রামের একটি মেয়েকে বিয়ে করেছ। এটা আমি শুনেছি এবং ছেলেটাকে দেখতে প্রতিদিন তার বাড়িতে মানুষ ভিড় করছে। ভিসা সংক্রান্ত কাজ শেষ করে ছেলেটি মেয়েটিকে চীনে নিয়ে যাবেন বলে জানতে পেরেছি। এতে করে দারিদ্র্যও ঘুচবে বলে আমার মনে হয়। মেয়ের পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরে আসবে।’
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন, ‘চীনের এক নাগরিক জীবননগর উপজেলার গয়েশপুর গ্রামে এসে একটি মেয়েকে বিয়ে করেছে। বিয়ের ঘটনাটি আমরা শুনেছি। তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছে। তাদের সার্বিক নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।’