ঝিনাইদহ শিশু হাসপাতালে মেয়াদ উর্ত্তীণ পাউরুটি, আতঙ্কে রোগী-স্বজন
ঝিনাইদহ শিশু হাসপাতালে মেয়াদ উত্তীর্ণ পাউরুটি সরবরাহ করা হয়েছে। তবে, তা খাওয়ার আগেই নজরে আসে এক রোগীর স্বজনের। এরপর তা মুহূর্তেই হয়ে যায় জানাজানি। এর উল্টোটি হলে ঝুঁকিতে পড়তে পারত অন্তত ২৫ শিশু ও তাদের স্বজনেরা। আজ মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সকালে ঘটে এই ঘটনা। এরপর থেকে শঙ্কিত তারা। তাদের অভিযোগ, সারাদিন ঘটনা ধামাচাপা দিতেই ব্যস্ত ছিল হাসপাতাল প্রশাসন। জড়িত সরবরাহকারীর বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি ব্যবস্থা। সন্ধ্যার পর সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রা রাণী দেবনাথ বলেছেন, সরবরাহকারীকে (ঠিকাদার) ডেকে বকাঝকা করা হয়েছে। তবে, এখনও তদন্ত কমিটি গঠন হয়নি। এদিকে, সরবরাহকারীর দাবি, রুটি মান ঠিকই ছিল, প্যাকেটের সিলে তারিখ ভুল।
হাসপাতালসূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ২৫ শয্যার হাসপাতালে ৩৬জন শিশু নানা রোগ নিয়ে ভর্তি আছে। এদের মধ্যে পথ্য সরবরাহ করা হয়ে থাকে মাত্র ২৫ জনের।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, জ্বর নিয়ে হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন আদনান। তার মা জেলা শহরের আরাপপুর গ্রামের মিম খাতুন জানান, সকাল অনুমান ১০টার দিকে পাউরুটি এবং ডিম সরবরাহ করা হয়। পাশের রোগীর মায়ের চোখে পড়ে পাউরুটির প্যাকেটে ১৭ জুন, ২০২৩ লেখা। এটি কর্তব্যরত নার্সকে জানালে হৈচৈ পড়ে যায়। এরপর ছুটে আসেন আবাসিক মেডিকেল অফিসারসহ সংশ্লিষ্টরা। তারা পাউরুটিগুলো শিশুদের না খাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন এবং মেয়াদ উর্ত্তীণ পাউরুটিগুলো সংগ্রহ করেন।
একাধিক রোগীর স্বজন জানান, এ ঘটনায় শঙ্কিত হয়ে পড়েন তারা। ভয়ে অনেকেই দুুপুরে খাবারও নেননি। বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের।
এ বিষয়ে হাসপাতালটির আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নেওয়াজ মোর্শেদ জানান, মেয়াদ উত্তীর্ণ পাউরুটি সরবরাহ করার ঘটনা সত্য। তিনি নিজে সেগুলো পরীক্ষা করেছেন। জানার পর সেগুলো কাউকে খেতে দেওয়া হয়নি। তার কাছ থেকে জানা যায়, বাবু নামের জনৈক ব্যক্তি হাসপাতালে খাবার সরবরাহকারী ঠিকাদার। তবে, ওই ঠিকাদারের বিষয়ে বিস্তারিত জানা নেই বলে দাবি করেন তিনি।
হাসপাতালের কনসালট্যান্ট (শিশু বিশেষজ্ঞ) ডাক্তার আলি হাসান ফরিদ বলেন, ‘পাউরুটিগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে স্থানীয় একটি বেকারিতে। ঠিকাদারসহ ওই রুটি প্রস্তুতকারীকে থ্রেট (বকাঝকা) করা হয়েছে।’
পথ্যসরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান স্থানীয় মেসার্স বার্ডস কনস্টাকশনের মালিক মো. মামুন আজিজ বাবু আজ মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে বলেন, ‘জেলা শহরের হামদহের লিয়াকত নামের এক ব্যক্তির কারখানা থেকে রুটিগুলো নেওয়া হয়।’ ঘটনার সত্য বলে স্বীকার করে তিনি দাবি করেন, রুটির প্যাকেটে সিল দেওয়ার সময় ভুলক্রমে ১৭ জুলাইয়ের পরিবর্তে ১৭ জুন দেওয়া হয়েছে। এরজন্য কারখানার শ্রমিকদের দায়ী করেন এবং রুটির মান সঠিক ছিল বলে দাবি তার।