সংস্কার বাস্তবায়নে বাংলাদেশ এগিয়েছে : আইএমএফ
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এক পর্যবেক্ষণে বলেছে, বাংলাদেশ তার সংস্কার সুপারিশ বাস্তবায়নে অগ্রগতি করছে। আইএমএফ এর এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের (এপিডি) পরিচালক কৃষ্ণা শ্রীনিবাসন বলেন, “জানুয়ারিতে আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য ৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের অনুমোদন দিয়েছে এবং দেশটি ইতোমধ্যে বিতরণের প্রাথমিক অর্থ পেয়েছে। এই প্রোগ্রামের প্রথম পর্যালোচনাটি হবে ২০২৩ সালের শেষ দিকে। সে সময় আইএমএফ স্টাফ টিম প্রোগ্রামের পরিমাণগত লক্ষ্যসমূহ এবং সংস্কার বাস্তবায়নের অগ্রগতি মূল্যায়ন করবে। তবে আইএমএফ এর সুপারিশ অনুযায়ী, এ পর্যন্ত বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।”
বাসস-এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে কৃষ্ণা আরও বলেন, “ভর্তুকি যৌক্তিককরণ, জ্বালানি মূল্যের ব্যয় সমন্বয়, বাজার-নির্ধারিত একক বিনিময় হারের দিকে অগ্রসর হওয়ার পাশাপাশি, মুদ্রানীতি কাঠামোকে শক্তিশালীকরণসহ কর্মসূচির লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশ পদক্ষেপ নিচ্ছে। অধিকন্তু, বিনিময় হারের নমনীয়তা শিথিল এবং ফরেন রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা কাঠামো শক্তিশালীকরণে বৈদেশিক সহনশীলতা বাড়বে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি উৎপাদনশীল অর্থনৈতিক খাতে ঋণ বরাদ্দ উন্নত করতে আরও দক্ষ আর্থিক খাত প্রয়োজন।”
আইএমএফ এর এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের (এপিডি) পরিচালক বলেন, ‘কার্যকর একটি ব্যাঙ্কিং খাতে দক্ষ আর্থিক সম্পদ বরাদ্দ- পুনরুদ্ধারকে ত্বরান্বিত করতে এবং সেইসঙ্গে, পুনরায় ব্যাপক প্রবৃদ্ধির গতি সঞ্চারে সহায়তা করবে। আর, তার মতে অগ্রাধিকারে থাকছে- বিশেষত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর (এসওসিবি) এনপিএলসমূহের মতো আর্থিক খাতের দুর্বলতাগুলো প্রশমন এবং বেসরকারি খাতে ঋণ বরাদ্দ বৃদ্ধি।’
স্বাধীন পরিচালকদের ভূমিকাসহ ব্যাংকগুলোর করপোরেট গভর্ন্যান্স শক্তিশালীকরণকে অগ্রাধিকার দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘পুনঃতফসিলকৃত ও অকার্যকর ঋণ প্রক্রিয়াকরণসহ শ্রেণীকরণ ও বিধিবদ্ধকরণ শর্তাবলী বেসেল স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ীই হওয়া উচিত। বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত বর্তমান বিচক্ষণ কাঠামো কঠোরভাবে প্রয়োগ করা। যেসব আইনি বিষয়গুলোর ফাঁক-ফোঁকড় ঋণ পরিশোধ বিলম্বিত করার সুযোগ করে দেয়, সেগুলোর সমাধান এবং ঋণদাতার অধিকারের জোরালো প্রয়োগ ও ঋণ পরিশোধে ঋণগ্রহীতার প্রণোদনার সহায়তায় আইনি ব্যবস্থা চালু করা দরকার।’
কৃষ্ণা আরও বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান অর্থায়ন চাহিদা মেটাতে বন্ড বাজারের আরও উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। জাতীয় সঞ্চয়পত্র ব্যবস্থার আরও সংস্কার এবং সরকারি সিকিউরিটিজের সেকেন্ডারি বাজারের উন্নয়নও হবে গুরুত্বপূর্ণ।’