মৌলভীবাজারের দুর্গম পাহাড়ে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান, আটক ১০
মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী পূর্ব টাট্টিউলী গ্রামের একটি দুর্গম পাহাড়ে জঙ্গি আস্তানায় কাউন্টার টেররিজম ইউনিট প্রধানের নেতৃত্বে ‘অপারেশন হিলসাইড’ পরিচালনা করা হয়। ওই অভিযানে কোনো হতাহতের ঘটনা ছাড়াই সন্দেহভাজন চার জন পুরুষ জঙ্গি ও ছয় জন নারী জঙ্গিকে আটক করা হয়। এসময় জঙ্গিদের সঙ্গে থাকা তিন শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাত ৮টা থেকে কুলাউড়ার কর্মধার পূর্ব টাট্টিউলী গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল। রাতের ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেন সহকারী পুলিশ কমিশনার সফিক। অভিযানে সারারাত বাড়িটি ঘেরাও করে রাখে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ।
পরে আজ শনিবার (১২ আগস্ট) সকালে মূল অভিযানে ঢাকা থেকে আসা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে সোয়াতসহ চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে চার ঘণ্টার অভিযানে কোনো রক্তপাত ছাড়াই ১০ জন জঙ্গিকে আটক ও তিন শিশুকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে। এলাকাটি ঘিরে রাখার আগেই কিছু জঙ্গি সেখান থেকে পালিয়ে যায়। জঙ্গিরা প্রায় এক মাস ধরে ওই এলাকায় জায়গা কিনে, ঘর বানিয়ে বসবাস শুরু করে। তারা পাহাড়ে গহীন অরণ্যে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিত বলেও জানা গেছে।
আজ শনিবার দুপুরে টাট্টিউলী এলাকায় কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান আসাদুজ্জামান প্রেস ব্রিফিং করে জানান, গত এক সপ্তাহ থেকে তাদের নজরদারী ছিল ওই এলাকায়। জঙ্গি আস্তানা থেকে ২.৫ কেজি বিস্ফোরক, ৫০টি ডেটোনেটর, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল, কমান্ডো বুটসহ অন্যান্য প্রশিক্ষণ সরঞ্জামাদি, ছুরি-রামদাসহ অন্যান্য ধারালো অস্ত্র এবং নগদ ৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মো. মনজুর রহমান, কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালেকসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আটক সন্দেহভাজন জঙ্গিরা হলেন- শরীফুল ইসলাম (৪০), হাফিজ উল্লাহ (২৫), খায়রুল ইসলাম (২২), রাফিউল ইসলাম (২২), মেঘনা (১৭), শাপলা বেগম (২২), মাইশা ইসলাম (২০), সানজিদা খাতুন (১৮), আমিনা বেগম (৪০), ও হাবিবা (২০)। এ ছাড়া উদ্ধার হওয়া তিন শিশু হলো-হুজাইফা (৬), আবিদা (১২ মাস), জুবেদা (১৮ মাস)
পরে এন্টি টেররিজম বিভাগের বোম্ব ডিসপজেল ইউনিট বোমা ও ডেটোনেটর স্থানীয় আছকরাবাদ খেলার মাঠে ধ্বংস করে।