প্রেমিকার দেখা না পেয়ে ভারতীয় যুবকের অশ্রুসিক্ত বিদায়
প্রেম মানে না কাঁটাতারের বেড়া, মানে না জাত-কুল-মান। সেই প্রেমের টানে মোংলায় ছুটে আসেন ভারতীয় যুবক তাপস বিশ্বাস। রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে টানা এক সপ্তাহ প্রেমিকার খোঁজে ঘুরেছেন পথে পথে, দ্বারে দ্বারে। না পেয়ে অবশেষে আজ মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সকালে অশ্রুসিক্ত তিনি ফিরে গেলেন স্বদেশে।
ভারতের বর্ধমান জেলার মেমারী থানার বাসিন্দা তাপস বিশ্বাস। তিনি পেশায় আইনজীবীর সহকারী। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনিই বড়। তাঁর বাবা দুলাল বিশ্বাস ব্যবসায়ী। বছর খানেক আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাঁর পরিচয় হয় বাগেরহাটের মোংলার হ্যাপি নামে এক তরুণীর। পরে জড়িয়ে পড়েন গভীর প্রেমে। পরিবারের সবার সঙ্গে আলাপচারিতা হতো ওই তরুণীর। তাই তাঁর সঙ্গে তাপসের পরিবারের সদস্যদের গড়ে উঠেছিল বেশ সখ্য। পুরো পরিবারই তাঁর আচরণে আপ্লুত। নতুন বধূ হিসেবে বরণ করতে নেওয়া হয়েছিল বিয়ের সব প্রস্তুতিও। বিষয়টি জানানো হয়েছিল আত্মীয়স্বজন ও পাড়াপড়শিদেরও।
তাই বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে প্রেমিকার কাছে বাংলাদেশে ছুটে আসেন ভারতীয় প্রেমিক তাপস। গত ৯ আগস্ট সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পৌঁছান খুলনায়। সেখান থেকে মোংলায় এসে পথে পথে খুঁজে বেড়ান প্রেমিকাকে। ঠিকানা পেলেও তাঁর সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকৃতি জানান ওই প্রেমিকা। আর এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ভিনদেশি এই প্রেমিক। ওই তরুণীর খোঁজে টানা কয়েকদিন ঘুরেছেন আশপাশে। শেষ পর্যন্ত ধরনা দিয়েছেন একটি মানবাধিকার সংগঠনের কাছেও। তাতেও সুফল হননি তিনি।
অবশেষে প্রেমিকার দেখা না পেয়ে ভারতীয় প্রেমিক তাপস এক সপ্তাহ পর চরম হতাশা ও গ্লানি নিয়ে পাড়ি দেন স্বদেশের পথে। এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে ভিনদেশি এ প্রেমিক কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এ বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন আসকের মোংলার সভানেত্রী সুমি লিলা বলেন, ‘প্রেমের টানে ভারত থেকে মোংলায় ছুটে আসা ওই যুবক আমাদের সংগঠনে এসেছিলেন। তাঁর আকুতি ছিল, এক নজর প্রেমিকাকে দেখার। এজন্য তিনি বেশ কান্নাকাটিও করেন। সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে তাঁদের সাক্ষাতের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি।’
এ বিষয়ে বাগেরহাট জেলা পরিষদ সদস্য (মোংলা) আব্দুল জলিল শিকদার জানান, ভারতীয় যুবক তাপস বিশ্বাস কোনো এক মাধ্যমে তাঁর কাছেও গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর প্রেমিকা তাঁকে অস্বীকার করেছেন।