যশোরের রাজনীতিতে কাজী শাহেদ আহমেদ
বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী কাজী শাহেদ আহমেদ ১৯৪০ সালের ৭ নভেম্বর যশোরে জন্মগ্রহণ করেন। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে সেনাবাহিনীতে ১৪ বছর চাকরি করেন। বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাকাডেমির প্রতিষ্ঠাকালীন প্লাটুন কমান্ডারদের একজন ছিলেন তিনি। ১৯৭৯ সালে তাঁর ব্যবসাজীবন শুরু হয়। ব্যবসা ক্ষেত্রে যেখানেই হাত দিয়েছেন, সোনা ফলিয়েছেন। মিডিয়া জগতে এসেই আধুনিকতার ছোঁয়া লাগান। সামাজিক কর্মকাণ্ডে এসে অসামান্য কিছু অলাভজনক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
রাজনীতিতেও সক্রিয় হয়েছিলেন তিনি। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৩ (সদর) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। চশমা প্রতীকে ভোট করলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ তাঁর সাথে ছিলেন। এর আগে যশোরের গ্রামীণ জনপদে স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন নিয়ে ব্যাপক কাজ করেছিলেন তিনি। ফলে গ্রামের মানুষের মাঝে তিনি আগে থেকেই পরিচিত ছিলেন। নির্বাচনের আগে পাশ্চাত্যের ঢংয়ে প্রচারণা চালিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছিলেন। সেবার এ আসন থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম (প্রয়াত) জয়লাভ করলেও ২০ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়েছিলেন কাজী শাহেদ আহমেদ। ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরপরই তিনি বিজয়ী প্রার্থীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এরপর আর রাজনীতিমুখী হননি। নিজ জন্মভূমি থেকে তাঁর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার ইচ্ছা অপূর্ণ থাকলেও পরবর্তীতে একই আসন থেকে তাঁর ছেলে কাজী নাবিল আহমেদ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে পরপর দুইবার সংসদ সদস্য হন।
‘আমার লেখা’ নামে প্রথম গ্রন্থে সাহিত্যাঙ্গনেও পরিচিতি লাভ করেন তিনি। ১৯৯৫ সালে ‘আমার লেখা’ প্রকাশের পর একই বছরেই ‘ঘরে আগুন লেগেছে’ বইটিও প্রকাশ পায়। ২০১৩ সালে তার ৭৩ বছর বয়সে প্রথম উপন্যাস ‘ভৈরব’ প্রকাশিত হয়, যা পরে ইংরেজিতেও অনূদিত হয়। আত্মজীবনী ‘জীবনের শিলালিপি’ প্রকাশিত হয় ২০১৪ সালে। একই বছর প্রকাশিত হয় উপন্যাস ‘পাশা’।
১৯৭৯ সালে ‘জেমকন গ্রুপ’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তার ব্যবসায়ী জীবন শুরু। প্রকাশক ও সম্পাদক ‘খবরের কাগজ’ ও ‘আজকের কাগজ’। বাংলাদেশে প্রথম অর্গানিক চা বাগানের প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। তার রয়েছে অসামান্য কিছু অলাভজনক উদ্যোগ। এসব অলাভজনক উদ্যোগের মধ্যে আছে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ ও কাজী শাহেদ ফাউন্ডেশন।