মানিকগঞ্জে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চার মামলা, আটক ৬
বিএনপির হরতালের দিনে মানিকগঞ্জে বেশ কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব ঘটনায় জেলার পৃথক থানায় চারটি মামলা করা হয়েছে, যেখানে আসামি করা হয়েছে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতা ও সাধারণ সম্পাদক এস এ কবির জিন্নাহসহ ৩৫৯ জনকে।
গতকাল রোববার (২৯ অক্টোবর) রাতে সদর থানা, ঘিওর ও সিঙ্গাইর থানায় এসব মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ইতোমধ্যে দলটির ছয় নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন- ঘিওর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জানে আলম, নালী ইউনিয়ন বিএনপির স্থানীয় সরকার সম্পাদক রাজা মিয়া, বিএনপির কর্মী খলিল মিয়া, রানা মিয়া, নাজমুল হোসেন ও মো. সালাউদ্দিন।
সদর থানার পুলিশ ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, হরতাল চলাকালে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সদর উপজেলার তরা এলাকায় যাত্রী নামিয়ে দিয়ে একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২৩ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে সদর থানায় মামলা করেন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জুয়েল রানা। একই মামলায় অজ্ঞাত আরও ২৫ থেকে ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ ছাড়া মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মানিকগঞ্জ সদর থানায় আরেকটি মামলা হয়েছে। সদর থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাত ১টার দিকে মানিকগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার রহমান তার রাজনৈতিক সহকর্মী কাইয়ুম খানকে নিয়ে রেজিস্ট্রেশনবিহীন একটি মোটরসাইকেল করে বাড়ি ফিরছিলেন। তারা মানরা এলাকায় পৌঁছালে তাদের গতিরোধ করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় তাদের মারধর করে মোটরসাইকেলটি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতা জুলফিকার বাদি হয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠেনের ২৩ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ২৫ থেকে ৩০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলার বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রউফ সরকার বলেন, ‘হরতালে গাড়ি পোড়ানো এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক তৈরি ও ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগে থানায় দুটি মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
ঘিওর থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হরতালের দিন দুপুরে মানিকগঞ্জ-ঝিটকা সড়কের ঘিওর উপজেলার উভাজানি এলাকায় মানিকগঞ্জগামী সিএনজিচালিতে একটি অটোরিকশা থেকে হরতাল সমর্থকেরা যাত্রী নামিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। এরপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে ভীতি তৈরি করে। এ ঘটনায় ঘিওর থানার এসআই আবদুল কাদের বাদি হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন। মামলায় বিএনপির ২০ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়।
সিঙ্গাইর থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ-হেমায়েতপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের গোবিন্দল এলাকায় সিঙ্গাইর পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুর রহমানকে মারধর করে তার মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় বেশ কয়েকজন। এ ঘটনায় গত রোববার রাতে ছাত্রলীগ নেতা সাইদুর রহমান বিএনপি ও দলটির অঙ্গসংগঠনের ৪৩ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩০ থেকে ৪০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
মামলার বিষয়ে এসএ জিন্নাহ কবির বলেন, ‘বিএনপি নাশকতা ও সহিংসতার রাজনীতি করে না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে আমাদের হয়রানি করতেই এসব মিথ্যা মামলা করেছে।’