প্রবাসীর পাকা ধান কেটে নিলেন ইউপি চেয়ারম্যান!
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় দলবল নিয়ে এক সৌদি প্রবাসীর জমির পাকা ধান কেটে নিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও তাদের উপস্থিতিতেই তাঁরা জমির পাকা ধান কেটে নিয়ে যান। আজ বুধবার (৭ নভেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ওই সৌদি প্রবাসীর পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ওই সৌদি প্রবাসী মো. দবির মোল্লা অভিযোগ করেন, উপজেলার ৩নং আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের মহিষারঘোপে তাঁর পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ৪৫ শতাংশ জমি রয়েছে। ওই জমি তাঁর বাবা গৌর শঙ্কর ঘোষের কাছ থেকে কিনেন।
দবির মোল্লা দাবি করেন, ওই জমি নিয়ে আদালতে মামলা ছিল। এ সব মামলায় তাঁর পক্ষে রায় এসেছে। কিন্তু তারা আদালতের রায়ও মানছে না।
প্রায় এক যুগ ওই জমি পতিত ছিল। এ বছর তিনি বিদেশ থেকে দেশে ফিরে ফেব্রুয়ারি মাসে ধান রোপণ করেন। ধান পেকে উঠলে আজ সকালে আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বুলবুল এবং ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা লোকজন নিয়ে ধান কাটতে আসেন। তিনি এ সময় ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে আলফাডাঙ্গা থানার এসআই আকবর আলীর নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, এ সময় পুলিশের সামনেই ইউপি চেয়ারম্যানের লোকেরা দবির মোল্লা ও তাঁর স্ত্রী ফাহমিদা ইসলাম মুক্তাসহ পরিবারের উপড়ে তেড়ে আসে। তারা কারো কথায় কর্ণপাত না করে জমির সব ধান কেটে নিয়ে যায়।
প্রবাসীর স্ত্রী ফাহমিদা ইসলাম মুক্তা অভিযোগ করেন, এর আগে তারা জমিতে লাগানো আম ও পেপেগাছসহ বিভিন্ন গাছের চারা কেটে ফেলে। তারা বারবার পুলিশের দ্বারস্থ হলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। উল্টো তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে অনেক মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। বর্তমানে তাঁরা পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। গ্রামেও থাকতে পারছেন না।
এ বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বুলবুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, ‘উত্তরাধিকার সূত্রে ওই জমি আমাদের। আমার জমির ধান আমি কেটে নিয়েছি। দবির মোল্লা আমাদের জমিতে অন্যায়ভাবে ধান রোপণ করেন।’
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আসা আলফাডাঙ্গা থানার এসআই আকবর আলী বলেন, কেটে নেওয়া ধান ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় রেখে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষ বসে মিটমাট করে নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া কোনো লিখিত অভিযোগ করা হলে সে ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।