আ.লীগের নির্বাচনি ইশতেহার প্রণয়ন প্রস্তাবনা সভায় বিএনপির দুই আহ্বায়ক
সরকার পতন আন্দোলনের কর্মসূচিতে সরব না হলেও আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার প্রণয়ন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় যোগ দিয়ে আলোচনার ঝড় তুলেছেন নাটোরের দুই সিনিয়র বিএনপিনেতা। আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর বাসভবনে ওই সভায় স্থানীয় বিএনপির আরও অন্তত সাত নেতা অংশ নেন।
গত ১২ নভেম্বর রোববার রাতে ওই মতবিনিময় সভায় সিংড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মজিবুর রহমান মন্টু, সিংড়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. আলী আজগরসহ বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা যোগ দেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার প্রণয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে আসছেন নাটোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন উপকমিটির সদস্য জুনাইদ আহমেদ পলক।
তারই ধারাবাহিকতায় গত ১২ নভেম্বর রাতে ওই মতবিনিময় সভায় বিএনপির দুই নেতাসহ বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা যোগ দেন। তাঁদের উপস্থিত থাকার বেশ কয়েকটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যা নিয়ে তীব্র আলোচনা চলছে জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে। দলীয় নেতাদের এমন কাণ্ডে ক্ষুব্ধ বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
জেলার কতিপয় নেতার মাধ্যমে অযোগ্য ও দলের প্রতি অনুগত নয়, এমন ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি করার ফলেই এমনটা ঘটছে বলে অভিযোগ করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের অনেকে।
প্রকাশ পাওয়া ছবিগুলোতে দেখা যায় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বাসভবনে অনুষ্ঠিত ওই মতবিনিময় সভা শেষে রাতের খাবার খাচ্ছেন তাঁরা। সেখানে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. আলী আজগরের খাবার টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে।
তবে তাদের ভুল বুঝিয়ে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানান উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান মন্টু। সৌজন্যমূলক আলোচনার জন্য সিংড়ার আইনজীবীদের দাওয়াত দেওয়া হয় প্রতিমন্ত্রীর বাসভবনে। সেখানে বিএনপি ও আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্টু বলেন, আলোচনা সভাটি যে আওয়ামী লীগের ইশতেহার বিষয়ে হচ্ছে তা আগে জানলে তিনি সেখানে যেতেন না।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ গনমাধ্যমকে জানান, ঘটনার রাতেই ছবিগুলো আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। তাঁরা নেতৃত্বের স্থানে থেকে চলমান আন্দোলনে সম্পৃক্ত না হয়ে আওয়ামী লীগের মন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে সেখানে গেছেন। এটা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। শিগগিরই তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানান তিনি।
গত ১২ নভেম্বর রাতে নিজ বাস ভবনে আইনজীবী ও চিকিৎসকদের আমন্ত্রণ জানান প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সেখানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার প্রণয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে সুপারিশ ও উপদেশ এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-৩, সিংড়া আসনের নির্বাচনি ইশতেহারের অঙ্গীকারসমূহ পূরণ, মূল্যায়ন, পর্যালোচনা শীর্ষক ওই মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়। সেখানে জুনাইদ আহমেদ পলক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ ওহিদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস প্রমুখ।