দেশের মানুষ একতরফা নির্বাচন প্রতিহত করবে : বিএসপিপি
আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনকে ‘একতরফা’ আখ্যায়িত করে তা প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছেন পেশাজীবী নেতারা। তারা বলেছেন, দেশে আজকে মানবাধিকার নেই, আইনের শাসন নেই। বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর চালানো হচ্ছে ইতিহাসের ন্যক্কারজনক জুলুম-নির্যাতন। এমন পরিস্থিতিতে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী দলগুলোকে বাইরে রেখে আবারও একতরফা নির্বাচন করতে যাচ্ছে। কিন্তু দেশের মানুষ সেই নির্বাচন হতে দেবে না এবং প্রতিহত করবে।’
আজ বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীতে এক মানববন্ধনে পেশাজীবী নেতারা এসব কথা বলেন। ‘মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার এবং আইনের শাসন নিশ্চিতের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)। বিভিন্ন পেশার ২২টি সংগঠনের নেতাকর্মীরা এতে অংশগ্রহণ করেন।
বিএসপিপির সাবেক আহ্বায়ক সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি এম আবদুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান হারুন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষকদের নেতা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সেলিম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল, মো. মহসীন, এডভোকেট ওমর ফারুক ফারুকী, সাংস্কৃতিক জোটের রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের ড. আব্দুর রশিদ, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক আবদুল করিম, অধ্যাপক মেজবাহ, ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, অধ্যাপক আনিছুর রহমান, অধ্যাপক ড. আবু জাফর, অ্যাবের মহাসচিব প্রকৌশলী আলমগীর হাছিন আহমেদ, প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান চুন্নু, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) প্রকৌশলী মাহবুব আলম, এডভোকেট আশরাফ জালাল মনন, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক মো. খুরশিদ আলম, ড্যাবের ডা. শহীদুর রহমান, ডা. মো. মেহেদী হাসান, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, আইনজীবীদের মধ্যে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার বলেন, ‘দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। দেশের অর্থনীতি সবকিছু অন্ধকারের দিকে যাচ্ছে। অথচ, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন তিনি নিয়ম রক্ষার নির্বাচন করছেন। তাহলে আজকে নির্যাতন নিপীড়ন কেনো? এবারও প্রহসনের নির্বাচন করতে যাচ্ছে। এটা তো সমঝোতার নির্বাচন। কিন্তু, দেশের মানুষ এটা হতে দেবে না। জনগণের পালস বুঝুন। তাদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দিন।’
বিএসপিপির আহ্বায়ক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘দেশে আইনের শাসনের করুন অবস্থা। আওয়ামী লীগ করলে কোনো মামলা নেই। কিন্তু, যদি বিরোধী দল করেন তাহলে মামলা হবে এবং জামিন হবে না। এটাই হলো আইনের শাসন। বিচারকদের কাছে আবেদন—দেওয়ালের লিখন পড়ুন আর সংবিধান মোতাবেক দায়িত্ব পালন করুন, জনগণ আপনাদের সঙ্গে আছে। আজকে বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের না পেলে তার পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের কোন আইনে এটা আছে? মনে রাখবেন, ওপর থেকে আল্লাহ তায়ালা কিন্তু দেখছেন।’
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুব্রত রায় বলেন, ‘যে ধরনের নির্বাচনের ব্যবস্থা শেখ হাসিনা করেছেন তা বিশ্বের গণতন্ত্রের সংজ্ঞা পাল্টে দিয়েছেন।’
জিয়া পরিষদের সভাপতি ডা. আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘দেশের মানুষ ৭ জানুয়ারি নির্বাচন প্রতিহত করবেন। সুতরাং, সরকারকে বলব, ভাগাভাগির নির্বাচন বন্ধ করুন। নচেত আপনাদের বিচার জনগণ করবে।’
সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘৭ জানুয়ারি নির্বাচন নিয়ে জনগণের কোনো উৎসাহ নেই। ইনশা আল্লাহ জনগণ সেই নির্বাচন প্রতিহত করবে।’
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সাবেক এটোর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমরা দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’