ছাইয়ের ভেতর ‘স্বপ্ন খুঁজছে’ তারা
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের মোল্লাবাড়ি বস্তিতে লাগা আগুনে প্রায় ৩০০টির মতো ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ভয়াবহ এ আগুনে অধিকাংশ বাসিন্দা জীবন বাঁচাতে গিয়ে তড়িঘরি বস্তি ছাড়েন। ফলে, ঘরের মালামালসহ কিছুই বের করতে পরেনি। সেজন্য, ছাই হওয়া ঘরের পুড়ে যাওয়া টিনের নিচে হাতড়িয়ে খুঁজছে বাসিন্দারা। আশা, যদি কিছু মেলে!
সুমি আক্তার ও তার বোন রুমা আক্তার বস্তির একটি কক্ষে থাকতেন। সঙ্গে দুই বোনের তিন সন্তানও থাকত ওই কক্ষে। আগুন লাগার পর কোনো রকমে জান নিয়ে ঘর ছাড়েন। ঘরে থাকা কিছুই বের করতে পারেননি তারা। তাই সকাল থেকেই তারা দুই বোন তাদের ঘরের টিন উল্টে ছাই সরিয়ে কিছু খুঁজছিলেন। তাদের আশা, যদি ঘরের মূল্যবান কিছু পাওয়া যায়।
দুপুরের দিকে ছাই সরাতে সরাতে সুমি আক্তার এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারিনি। দুই বোনের স্বর্ণের চুড়ি ছিল। কানের দুল ছিল। নাকফুল ছিল। সব শেষ। আর একটা সংসারে যা যা থাকার কথা, সবই ছিল। তাই খুঁজতেছি, যদি কিছু পাওয়া যায়।’
সে সময় রুমা বলছিলেন, ‘এখন আমাদের থাকার জায়গাও নেই। আজ রাতে শীতের মধ্যে কোথায় থাকব, জানি না। আমাদের সব শেষ হয়ে গেল। তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে আমরা কোথায় যাব এখন?’
মোল্লাবাড়ি বস্তিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমার ঘরে মধ্যে ১২ হাজার টাকা ছিল। সেগুলো নিতে পারিনি। এ ছাড়া ফ্রিজ, খাটসহ প্রায় দুই লাখ টাকার মালামাল ছিল। কিছু বের করতে পারিনি। আজ রাতে কোথায় থাকব, তাও জানি না।’
গতকাল শুক্রবার দিনগত রাত ২টা ২৩ মিনিটে মোল্লাবাড়ি বস্তিতে আগুন লাগে। আজ শনিবার (১৩ জানুয়ারি) ভোরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘বস্তিতে সাধারণত গ্যাস লিকেজ কিংবা শর্ট সার্কিট থেকে আগুনে সূত্রপাত হয়ে থাকে। এ বস্তিতেও একই কারণে আগুন লেগেছে বলে আমাদের প্রাথমিক ধারণা। তবে আমরা তদন্তের মাধ্যমে জানতে পারব, আসলেই কী কারণে আগুন লেগেছে। এ ঘটনায় দুজন মারা গিয়েছেন এবং ৩০০টি ঘর পুড়েছে।’