জাবিতে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে চার শিক্ষার্থী আটক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আবাসিক হলে স্বামীকে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে চার শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন জঙ্গলে ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী।
আটকরা হলেন—মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান সাগর, মীর মশাররফ হোসেন হলের ছাত্র হাসানুজ্জামান ও সাগর সিদ্দিকী। এদের মধ্যে মূল অভিযোগ ওঠা মোস্তাফিজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। এ ছাড়া ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পর মামুন নামে বহিরাগত এক যুবক এখনও পলাতক রয়েছেন।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগনেতা মোস্তাফিজুর রহমানের ধর্ষণকাণ্ডের সহযোগী মামুন ভুক্তভোগী ওই নারীর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। গতকাল শনিবার রাতে মামুন তার স্বামীকে ক্যাম্পাসে ডেকে আনেন। পরে তাকে মীর মশাররফ হোসেন হলের ‘এ’ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে আটকে রেখে বিষয়টি তার স্ত্রীকে জানান। এরপর স্বামীর সন্ধানে মীর মশাররফ হোসেন হলে ছুটে আসেন ভুক্তভোগী ওই নারী। পরে ওই নারীকে তার স্বামীর কাছে নিয়ে যাবার কথা বলে তারা নিয়ে যান হল সংলগ্ন জঙ্গলে। সেখানে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন তারা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে জাবি শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমানকে মোবাইলফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। পরে তার মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় মোস্তাফিজুর রহমানকে বহিষ্কার করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। বিষয়টি নিশ্চিত করে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘মোস্তাফিজুর রহমানকে ছাত্রলীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ করা হবে।’
এ বিষয়ে মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাব্বির আলম বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। বিষয়টি অত্যন্ত লজ্জার। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা মীর মশাররফ হোসেন হল পরিদর্শন করেছেন। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত, তাদের যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’
এ বিষয়ে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে মূল অভিযোগ ওঠা মোস্তাফিজুর রহমানসহ চার শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ওই নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।’