উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সাতজনের নামে ধর্ষণ মামলা
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগনেতা গাজী এজাজ আহমেদসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করে একটি ধর্ষণের মামলা হয়েছে। ধর্ষিতা নারী নিরাপত্তাজনিত কারণে আত্মগোপনে থাকায় আজ বুধবার (৬ মার্চ) তাঁর খালাতো ভাই মো. গোলাম রুসুল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে এই অভিযোগ করেন।
ট্রাইবুনালের বিচারক দিলরুবা সুলতানা মামলাটি গ্রহণ করে ডুমুরিয়া থানাকে এজারহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন মানবাধিকার সংস্থার সমন্বয়কারী ও আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোমিনুর রহমান।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেন ধর্ষিতা নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণামূলক সম্মতি আদায় করে দীর্ঘদিন ধরে তাঁর সঙ্গে দৈহিক মেলামেশা করে আসছিল। গত ২৭ জানুয়ারি ভিকটিম তাকে বিয়ে করার কথা বললে প্রধান আসামি নিজে ও তাঁর সহযোগীরা তাড়িয়ে দেন। সেদিন তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে এলে চিকিৎসক তাঁকে ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করেন। ওসিসিতে তার মেডিকেল টেস্ট করা হয়। পরে বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান জানতে পেরে ২৮ জানুয়ারি বিকেলে তাঁর লোকজন পাঠিয়ে জোর করে হাসপাতালের ওসিসি থেকে তুলে নিয়ে যান। এই সময় সেখানে মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে চেয়ারম্যানের লোকদের ধস্তাধস্তি হয়। পরে তাঁকে সোনাডাঙ্গা থানায় নিয়ে মিথ্যা জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়। ঘটনাটি বেশ কিছু মিডিয়ায় প্রচার হয়।
এই মামলায় অভিযুক্তরা হলেন ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ, গাজী তৌহিদ, গাজী আব্দুল হক, আল আমিন গাজী, আক্তারুল আলম সুমন, সাদ্দাম গাজী, মো. ইমরান হোসেনসহ অজ্ঞাত পরিচয় ১০-১৫ জন।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট অলোকানন্দ দাশ জানান, আদালত মামলা গ্রহণ করে ডুমুরিয়া থানাকে এজাহার হিসেবে গণ্য করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরও জানান, আদেশে বাদীর হলফনামার কাগজপত্র পরীক্ষা করে এই পিটিশনটি দ্রুত এজহার হিসেবে গণ্য করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আগামী ১৮ মার্চের মধ্যে অগ্রগতি জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি আদালতের কপি এখনও পাননি বলে জানান। তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনা পেলে সেই মতো আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ বলেন, ‘আমি মামলার নথি পাইনি। আর বাদী কে জানি না। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মহিলা নিজেকে অপহরণ বা ধর্ষণের কথা আগে অস্বীকার করেছিল।’