লেখক হোসেনউদ্দীন হোসেন আর নেই
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক ও গবেষক হোসেনউদ্দীন হোসেন আর নেই। আজ সোমবার (২০ মে) বিকেল ৪টার দিকে যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শারীরিক নানা জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে গত প্রায় এক সপ্তাহ যাবৎ তিনি এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
হোসেনউদ্দীন হোসেনের ছোট মেয়ে শাহানাজ রাহানা বলেন, ২০১৯ সালে তার বাবার ওপেন হার্ট সার্জারি হয়। পরে গলব্লাডারে পাথর ধরা পড়ে। তার কিডনিতেও সমস্যা ছিল। গত ১৪ মে তিনি খুব অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে যশোর শহরের কুইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। সিটিস্ক্যান রিপোর্টে তার ব্রেন হ্যামারেজ ধরা পড়ে। বেশিরভাগ সময় তিনি চেতনাহীন থাকতেন।
হোসেনউদ্দীন হোসেন ১৯৪১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। নিজ গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের পর ঝিকরগাছা ইংরেজি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৫৭ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫৯ সালে সম্পন্ন করেন উচ্চ মাধ্যমিক। ১৯৫৫ সালে তার প্রথম কবিতা কলকাতার দৈনিক পত্রিকা লোকসেবকে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে তার বিভিন্ন প্রবন্ধ, গল্প, কবিতা ঢাকা ও কলকাতার বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ হওয়া শুরু করে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেও অংশ নেন এই কবি। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে—নষ্ট মানুষ, অমৃত বৈদেশিক, সাধুহাটির লোকজন, ইঁদুর ও মানুষেরা, প্লাবন এবং একজন নুহ, ভলতেয়ার ফ্লবেয়ার কলসত্ব ত্রয়ী উপন্যাস ও যুগমানস, ঐতিহ্য আধুনিকতা ও আহসান হাবীব, বাংলার বিদ্রোহ, সমাজ সাহিত্য দর্শন প্রবন্ধ, রণক্ষেত্রে সারাবেলা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, লোকলোকোত্তর গাঁথা কিংবদন্তী, বনভূমি ও অন্যান্য গল্প, অনন্য রবীন্দ্রনাথ প্রমুখ।