বিয়ের ৩০ বছর পর স্বামী-স্ত্রীর পাল্টাপাল্টি মামলা
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বিয়ের ৩০ বছর পর স্বামী-স্ত্রী একে অপরের বিরুদ্ধে আদালতে পাল্টাপাল্টি মামলা করেছেন। স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক ও মারপিটের অভিযোগে মামলা করেছেন স্ত্রী আবার স্ত্রীর বিরুদ্ধে জাল কাবিননামায় জোর করে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন স্বামী।
আজ সোমবার (২০ মে) সকালে শরিফুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন।
স্বামী শরিফুল ইসলাম বকুলের অভিযোগ, জাল কাবিননামায় টিপসহি নিয়ে দেনমোহর হিসেবে ১৫ লাখ টাকা উল্লেখ করে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি উল্লাপাড়া আমলি আদালতে স্ত্রীসহ ৯ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
আদালতের নির্দেশে মামলাটি সিআইডি পুলিশ তদন্ত করছে।
শরিফুল ইসলাম বকুল বলেন, সবাই জানে স্বামীর দ্বারা স্ত্রীরা নির্যাতনের শিকার হয়। কিন্তু আমি স্ত্রী দ্বারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। আমাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জোর পূর্বক জাল কাবিননামায় স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। ঘরের তালা ভেঙে আসবাপত্র যা কিছু ছিল সব কিছু লুট করে নিয়ে গেছে। আমি চরমভাবে স্ত্রীর দ্বারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। জমি-জমা যা কিছু ছিল সব কিছু স্ত্রীর নামে লিখে দিয়েছি। এখন আমার নামে বাড়ির ৬ শতক জায়গা আছে সেটুকুও তার নামে লিখে দিতে বলে। বাড়ি লিখে না দেওয়ায় আমাকে নির্যাতন ও হয়রানি করা হচ্ছে।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে স্ত্রী সালমা খাতুন বলেন, ‘তিনি যে অভিযোগে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, তা সত্য নয়। ১৯৯৪ সালে পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়। তখন কাবিননামা করা হয়নি। তাই ২০২১ সালে কাবিননামা করেছি। মামলায় আমার পক্ষে রায় আসবে।’
জানা যায়, উল্লাপাড়া উপজেলার সাতবিলা গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম বকুলের সঙ্গে ১৯৯৪ সালে বিয়ে হয় একই উপজেলার ভাটবেড়া গ্রামের সালমা খাতুনের। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর সড়ক দুর্ঘটনায় শরিফুল ইসলাম পা ভেঙে পঙ্গু হয়ে যান। এরপর স্ত্রী সালমা খাতুন ছেলেমেয়ে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। এরপর ২০২০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে সালমা খাতুন তাঁর স্বামী শরিফুলের বিরুদ্ধে যৌতুক ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলা করেন।
এরপর ২০২০ সালের ১২ এপ্রিল উল্লাপাড়া উপজেলার দুর্গানগর ইউনিয়ন পরিষদে শরিফুল ইসলামকে আটকে রেখে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক কাবিননামায় স্বাক্ষর নেন স্ত্রী সালমা খাতুন ও তাঁর আত্মীয়রা। শরিফুল ইসলাম স্ত্রীর কাছে কাবিননামা ফেরত চাইলেও তা দেননি স্ত্রী। পরে কাবিননামায় মোহরানা হিসেবে ১৫ লাখ টাকার কথা উল্লেখ করা হয়। ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি কাবিননামা উদ্ধারের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পিটিশন মামলা করেন শরিফুল ইসলাম। কাবিননামা জাল করে শরিফুল ইসলামের ২০ লাখ টাকার ক্ষতি করেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।