ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ৪ ঘণ্টা অবরোধ শিক্ষার্থীদের
কোটা বাতিলের দাবিতে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার কোটবাড়ি এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার (৭ জুলাই) বিকেল ৪টায় শুরু হওয়া অবরোধ শেষ হয় রাত ৮ টায়। এই চার ঘণ্টার অবরোধে রাস্তার উভয় পাশে ২০ কিলোমিটারজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়।
আজকের আন্দোলনের কুবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে অংশ নিয়েছেন ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজ, জেলার বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা 'লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই, আমার সোনার বাংলায়, বৈষ্যমের ঠাই নাই, লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে, একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার, সারা বাংলা খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’ ইত্যাদি বলে স্লোগান দেন।
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কুবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী সানজিদা বলেন, ‘আমরা মেয়ে হলেও কোটা চাই না। মেয়েরা এখন মেধায় অগ্রসর। বিশ্ববিদ্যালয়েও মেয়েদের আসন ছেলেদের প্রায় সমান। উচ্চ শিক্ষায়ও মেয়েদের সংখ্যা বেশি। মুক্তিযোদ্ধা দেশে এখন তেমন জীবিত নেই। তাদের জন্য এত বেশি কোটা থাকা বৈষম্যমূলক।'
কুবির রসায়ন বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত হোসেন বলেন, সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধা এক শতাংশও নেই। তাদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা থাকতে পারে না। কোটার কারণে মেধাবীরা জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। একটি দেশ এভাবে চলতে পারে না।'
এই বিষয়ে ২০২০-২১ সেশনের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী শাহাদাত তানভীর রাফি বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে কোটার বৈষম্য দূর করতে হবে এবং মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ চাই। আর নয় আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’
ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম মাহিন বলেন, ‘আমার বয়স ১৯। এ বছর গুচ্ছ পরীক্ষা দিয়ে মেধা তালিকায় কিছুটা পেছনে ছিলাম। কোটা না থাকলে অনায়াসে একটি সাবজেক্ট পেয়ে যেতাম। কোটার কারণে সাবেজেক্ট পাইনি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়েও একই ঘটনার মুখোমুখি হয়েছি।’
অবরোধ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও আন্দোলন সমন্বয়কদের মধ্যে অন্যতম মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন বলেন, ‘আমরা আজকের মতো আমাদের কর্মসূচি শেষ করছি। যারা উপস্থিত ছিলেন সবাইকে ধন্যবাদ। আমরা সারা বাংলাদেশের সঙ্গে সমন্বয় করে আমাদের আগামী কর্মসূচি জানিয়ে দিব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।’
এদিকে কুমিল্লা হাইওয়ে সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মাসুম সরকার বলেন, ‘থেমে থাকা যানবাহনগুলো যাতে সুশৃঙ্খলভাবে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে সে জন্য হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা সক্রিয় রয়েছে।’
এর আগে গত ৪ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রায় তিন ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। পরবর্তী সময়ে চার দফা দাবি জানিয়ে অবরোধ তুলে নেয় তারা।