কুয়াকাটায় ‘আবেদ আলীর হোটেল’ টক অব দ্য কান্ট্রি
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ‘হোটেল সান মেরিনা’র নির্মাণকাজ এখনও শুরু হয়নি। তবে এ হোটেল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে আলোচনার সৃষ্টি করেছেন সৈয়দ আবেদ আলী। তিনি ইতোমধ্যে নিয়োগসহ ৩০টি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক ছিলেন।
গতকাল সোমবার (৮ জুলাই) দুপুর থেকে এ হোটেল নিয়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা রকমের পোস্ট দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবেদ আলীর বাড়ি মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলায়। তার বাবার নাম আবদুর রহমান মীর। ডাসার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার জন্য তিনি ইতোমধ্যে এলাকায় পোস্টার-ব্যানার টানিয়েছেন।
গত ১৮ মে আবেদ আলী তাঁর ফেসবুক পেজে এ হোটেল নিয়ে স্ট্যাটাস দেন। তবে দুদিন ধরে এ বিষয়টি কলাপাড়া-কুয়াকাটাসহ উপকূলের মানুষের চোখে পড়ে। সান মেরিনা হোটেল নিয়ে আবেদ আলী তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমাদের নতুন হোটেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলাম আজ। সমুদ্রকন্যার পাড়ে আজীবন নিজের জন্য একটা থাকার ব্যবস্থা ও একই সাথে একটা হোটেলের মালিকানা অর্জন করতে আপনিও শেয়ার কিনতে পারেন। শেয়ার কিনতে যোগাযোগ করুন।’
সান মেরিনা হোটেলটি এখনও নির্মিত হয়নি। এখানের জায়গা খালি পড়ে আছে। সামনের অংশে ৭-৮টি টিনশেড দিয়ে তৈরি রুম আছে। এ ছাড়া হোটেলটি কোনো ডিজাইনে হবে তার ছবি দিয়ে একটি সাইনবোর্ড ঝুলানো রয়েছে নির্ধারিত জায়গার সামনের অংশে।
২০১০ সালে এ হোটেলের মূল মালিক দাবিদার মো. মোশারফ হোসেন আবাসিক হোটেল নির্মাণ করার জন্য কুয়াকাটা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের পাঞ্জুপাড়ায় ৪০ শতাংশ জমি কিনেন।
সান মেরিনা হোটেলটির বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য অনুসন্ধান করে জানা যায়, এ হোটেলটির মালিক মো. মোশারফ হোসেন। তিনি লিবার্টি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এ গ্রুপ পিডিবি (পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড), পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি), রুরাল ইলেট্রিফিকেশন বোর্ড (আরইবি), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি), ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ঠিকাদার হিসেবে সাবস্টেশন ও ট্রান্সমিশন লাইনের নিয়মিত কাজ করে থাকেন।
সান মেরিনা হোটেলে কর্মরত মো. ফারুক হোসেন বলেন, আমি মোশাররফ স্যারের অধীনে আট বছর ধরে চাকরি করছি। সৈয়দ আবেদ আলী নামে কাউকে আমি দেখিনি। তবে তিনি কয়েক মাস আগে এখানে এসে হোটেলের শেয়ার নেওয়ার জন্য আলোচনা করেছেন। তখন আমি তাকে মোশাররফ স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছি। তখন একটা ছবি তুলতে দেখেছি আমাদের হোটেলের বিজ্ঞাপনের।’
সান মেরিনা হোটেলের মালিক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গত দুই-তিন মাস আগে সৈয়দ আবেদ আলী আমার হোটেলটির সামনে অপর একটি হোটেলে এসে উঠেন। পরের দিন সকালে আমার হোটেলের জায়গায় গিয়ে শেয়ার ক্রয় করবেন বলে জানান। তখন তিনি আমার লোকের কাছ থেকে শেয়ার কেনার বিসয়ে বিস্তারিত জেনে যান। এ পর্যন্তই। আসলে আমি কখনও তাঁকে দেখিনি এবং চিনিও না।’
মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, ‘আবেদ আলীকে একজন টাউট প্রকৃতির লোক বলে মনে হয়েছে। আমি এ জন্য ঢাকার গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করব।’