গুজব প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়ার দায় নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছি : প্রতিমন্ত্রী পলক
‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে ইন্টারনেট ব্যহত হওয়া এবং এই সোশ্যাল মিডিয়ার গুজব প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়া এবং সবকিছুর দায়-দায়িত্ব, ব্যর্থতা আমি নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার যেকোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’
আজ শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকেলে নাটোরের সিংড়ায় নিজ বাসভবনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় এ প্রতিশ্রুতি দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, “আমাদের যে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘এ দেশের সম্পদ জনগণের সম্পদ।’ এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল, আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতুসহ ডিজিটাল বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন—এই সবকিছু কিন্তু জনগণের কষ্টার্জিত ট্যাক্সের পয়সায়, প্রবাসে এক কোটি ভাইবোনের রেমিটেন্সের পয়সায় হয়েছে। কিন্তু আজকে যারা হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পাদ নষ্ট করছে, তারা নিশ্চয়ই বাংলাদেশের ভালো চাইতে পারে না। তার পরও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাদের দেশের যে সম্পদের ক্ষতি তা আমরা পূরণ করতে পারব। কিন্তু আমাদের তরুণ প্রজন্মের হৃদয়ের যে ক্ষত সেটা পূরণ করতে আমাদের অনেক সময় লেগে যাবে।’ সে কারণে আমি বলতে চাই, আমাদের যদি কারো দায়িত্বে-কর্তব্যে অবহেলার কারণে; আমাদের ব্যর্থতার কারণে আমাদের তরুণ প্রজন্ম আমাদেরকে ভুল বুঝে, আমাদের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়—তাহলে সেই দোষের শাস্তি আমরা পাই। যদি দায়িত্বে কর্তব্যে আমাদের অবহেলা হয়, যদি আমাদের সে শাস্তি ভোগ করতে হয়, আমরা সে শাস্তি ভোগ করতে প্রস্তুত আছি। যেকোনো সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নিতে রাজি আছি। কিন্তু আমাদের কষ্ট হয় যখন আমাদের কোনো ভুল বা আমাদের কোনো ব্যর্থতার কারণে আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে দোষারোপ করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে সমালোচনা এবং ষড়যন্ত্র করা হয়।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের যদি কোনো ভুল হয়, অপরাধ হয় তাহল সে ভুলের শাস্তি বা সংশোধনের সুযোগ আপনারা আমাদের দেবেন। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনাকে ভুল বুঝবেন না। শেখ হাসিনা যদি নিরাপদ না থাকেন তাহলে বাংলাদেশ নিরাপদ থাকবে না। আমাদের ভুল থাকতে পারে, আমাদের নেতাদের ভুল থাকতে পারে—কিন্তু সেই ভুলের শাস্তি যেন আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী না পান। আমাদের ব্যর্থতার দায়-দায়িত্ব আমাদেরকেই নিতে হবে। আমাদের ভুলের দায়টা নিজের কাঁধে নিতে হবে। আমাদের ভুলের কারণে আমাদের অবহেলার কারণে, আমাদের ব্যর্থতার কারণে যে সংকটময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, সে দায়টা আমাদের কাঁধে নিয়ে আমরা যেন সে দায় স্বীকার করে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রন্মের ছাত্রছাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিরাপদ রাখার জন্য, বাংলাদেশকে নিরাপদ রাখার জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তুত থাকি।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমার যে দায়, আমার যে ব্যর্থতা সেটার দায় এবং দায়িত্ব আমি কাঁধে নিয়ে জননেত্রীর যেকোনো শাস্তি অথবা যেকোনো সিদ্ধান্ত আমি মাথা পেতে নেব। আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে তরুণ প্রজন্মের কাছে আমার যদি কোনো ভুলত্রুটি হয়ে থাকে আমি করজোরে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। এই ইন্টারনেট ব্যহত হওয়া এবং এই সোশ্যাল মিডিয়ার গুজব প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়া এবং সবকিছুর দায়-দায়িত্ব, ব্যর্থতা আমি নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছি। যেকোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।
সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট অহিদুর রহমান শেখের সভাপতিত্বে শোক সভায় আরও বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক ও সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌসসহ আওয়ামী লীগের নেতারা।