ত্বকী হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩, ছয় দিনের রিমান্ড
নারায়ণগঞ্জে আলোচিত মেধাবী শিক্ষার্থী তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যা পিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যা ব)। গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন হলেন শাওন, মামুন ও কাজল। আজ মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্ব) তাদের নারায়ণগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত দুই জনের ছয় দিন করে ও একজনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি আজ রাত ৮টার দিকে নিশ্চিত করেছেন র্যা ব ১১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা জানান, গতকাল সোমবার দুজন ও আজ মঙ্গলবার একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা ত্বকী হত্যার সঙ্গে জড়িত এবং এর আগে গ্রেপ্তার হননি।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ বিকেল ৪টার দিকে নারায়ণগঞ্জের শায়েস্তা খান রোডের বাসা থেকে বেরিয়ে স্থানীয় সুধীজন পাঠাগারে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয় ত্বকী। পরের দিন তার 'এ' লেভেল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়, যেখানে দেখা যায় ত্বকী সারা বিশ্বে পদার্থবিজ্ঞানে সর্বোচ্চ ৩০০ নম্বরের মধ্যে ২৯৭ পেয়েছিল। ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে তারর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মরদেহ উদ্ধারের পর তার বাবা রফিউর রাব্বি বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
ওই বছরের ১৮ মার্চ শামীম ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমান, জেলা যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা জহিরুল ইসলাম পারভেজ ওরফে ক্যাঙারু পারভেজ, জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রাজীব দাস, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজন, সালেহ রহমান সীমান্ত ও রিফাত বিন ওসমানসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে সম্পূরক অভিযোগ জমা দেয় পুলিশ।
পরে রফিউর রাব্বির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে ওই বছরের ২০ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মামলাটি র্যা বের কাছে হস্তান্তর করে।
২০১৩ সালের ৭ আগস্ট আজমেরীর ‘উইনার ফ্যাশন’ অফিসে অভিযান চালিয়ে রক্তমাখা পোশাক, একটি পিস্তলের বাট এবং ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম জব্দ করে র্যাখব। ওই সময় র্যাকব কর্মকর্তারা দেয়াল, সোফা ও আলমারিতে বেশকিছু গুলির চিহ্নও দেখতে পান।
এদিকে র্যালবের ফাঁস হওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে ত্বকী হত্যাকাণ্ডে ১১ জন অভিযুক্তের প্রত্যেকের ভূমিকার কথা সবিস্তারে উল্লেখ করা হয়।
আজমেরী ছাড়া অন্য অভিযুক্তরা হলেন ইউসুফ হোসেন লিটন, সুলতান শওকত ওরফে ভ্রমর, তায়েবউদ্দিন জ্যাকি, রাজীব, কালাম শিকদার, মামুন, অপু, কাজল, শিপন ও জামশেদ হোসেন।
র্যা ব অভিযুক্ত লিটন, ভ্রমর, জ্যাকি এবং সন্দেহভাজন হিসেবে রিফাত বিন ওসমান ও সালেহ রহমান সীমান্তকে গ্রেপ্তারও করে। তবে সবাই পরে জামিনে বেরিয়ে আসেন।
গ্রেপ্তার হওয়ার পর ওই বছরের জুলাই এবং নভেম্বর মাসে যথাক্রমে লিটন এবং ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে পরিকল্পনা থেকে হত্যা পর্যন্ত সব ঘটনার বিবরণ দিয়েছিলেন। যদিও পরবর্তী সময়ে ভ্রমর আদালতে দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহারেরও আবেদন করেছিলেন। ভ্রমর ও লিটনসহ এই মামলার সব আসামি আদালত থেকে জামিন নিয়ে বর্তমানে পলাতক।