বাবাকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে কিশোরগঞ্জে ছেলেসহ আটক ৪
টাকা দিতে অপারগ হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে বাবাকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে ছেলেসহ চারজনকে আটক করেছে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ। গত ১৯ অক্টোবর দিনগত রাতে জেলার বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের সুলতানপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হত্যার শিকার নিবু মিয়া (৬৫) বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের মৃত সুন্দর আলী মুন্সির ছেলে।
এ ঘটনায় আটকরা হলেন নিহত নিবু মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া (২৪), তার বন্ধু ইলেকট্রিশিয়ান বাবুল মিয়া (৩২), কসাই নজরুল ইসলাম (৪৫) ও রাজমিস্ত্রী সুমন মিয়া (২৬)।
আজ শনিবার (২৬ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে বাবাকে হত্যা ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী।
পুলিশ সুপার জানান, গত ২০ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ধান ক্ষেত থেকে নিহত নিবু মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে। পরে এ ঘটনায় নিহতের অপর ছেলে আব্দুর রহমান হৃদয় (২৮) বাদী হয়ে বাজিতপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের পর পুলিশের একটি দল অনুসন্ধান চালিয়ে বাজিতপুর উপজেলার দক্ষিণ পিরিজপুর বাজার এলাকার আ. হাই মেম্বারের হোটেল থেকে হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত আসামি মো. বাবুল মিয়াকে আটক করে। আটক আসামি মো. বাবুল মিয়া নিজেকে জড়িয়ে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এবং তার দেওয়া তথ্য মতে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত নিহত নিবু মিয়ার ছোট ছেলে সোহেল মিয়াসহ আরও তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার আরও জানান, ১ বছর আগে নিহত নিবু মিয়া ২১ লাখ টাকা দিয়ে জমি বিক্রি করে সেই টাকা থেকে ৬ লাখ টাকা দিয়ে তার ছোট ছেলে সোহেল মিয়াকে বিদেশে পাঠায়। কিন্তু সোহেল বিদেশে থাকতে না পারায় দেশে চলে আসে এবং পারিবারিকভাবে বিয়ে করে। সংসারের খরচ চালাতে একটি এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে পুরোনো অটোরিকশা কিনেন সোহেল। কিন্তু ঋণের কিস্তি দিতে না পেরে সোহেল তার বাবার কাছে জমি বিক্রি বাবদ আরও যে টাকা ছিল তা তাকে দেওয়ার জন্য বলে। কিন্তু টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়।
ঘটনার দিন ১৯ অক্টোবর তার বাবার কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা নেওয়ার উদ্দেশ্যেই সে তার বন্ধুদের নিয়ে নিবু মিয়াকে জবাই করে হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আটক বাবুল মিয়া আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে টাকার জন্য সোহেল মিয়া বন্ধুদেরকে নিয়ে বাবাকে হত্যা করেছে বলে জানায় বাবুল।