বৈদ্যুতিক মিটার চুরি করে বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদায়, থানায় অভিযোগ
অভিনব কায়দায় রাতের আঁধারে একের পর এক চুরি হচ্ছে বিদ্যুতের মিটার। আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর উপায়ে আদায় করা হচ্ছে টাকা। দীর্ঘ দিন ধরে এই কায়দায় সংঘবদ্ধ চক্রটি অপকর্ম করছে। ঝামেলা এড়াতে বাধ্য হয়েই চোর চক্রের চাহিদা অনুযায়ী বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠিয়ে মিটার ফেরত নিচ্ছেন গ্রাহকরা।
সম্প্রতি গাইবান্ধার শিল্পাঞ্চলখ্যাত গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জে বাণিজ্যিক ও শিল্প গ্রাহকদের বৈদ্যুতিক মিটার চুরির হিড়িক পড়ে গেছে। কয়েকদিন আগে একটি বেসরকারি ব্যাংকের উপ শাখার মিটার চুরি হওয়ার পর টাকা দিয়েও মিটার ফেরৎ না পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানা ও পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ করা হয়। ফলে ওই অঞ্চলের বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম উৎকণ্ঠা। ইতোমধ্যে এ অভিযোগে থানায় এজাহার করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও ভুক্তভোগী গ্রাহক।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ নভেম্বর রাতে শাখা ভবনের মিটারটি চুরি হয়। সেখানে লেখা চিরকুটে দেওয়া বিকাশ নাম্বারে (০১৯৯৪-১৮৫৯৮৫) তাদের সঙ্গে কথার পর ছয় হাজার টাকা দেওয়া হয়। এই টাকা কম হয়েছে বলে চোরেরা আবার দুই হাজার টাকা বিকাশ করিয়ে নেয়। কিন্তু আট হাজার টাকা পাওয়ার পরও তারা মিটার ফেরত দেয়নি। পরে আরও চার হাজার টাকা চায়। শুধু তাই নয়, টাকা না দিয়ে নতুন মিটার লাগালে আবারও তা চুরি করবে বলে হুমকি দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের উপশাখা ব্যবস্থাপক গত ১০ নভেম্বর গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহিমাগঞ্জ সাব-জোনাল অফিসে ও গোবিন্দগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেন। ওইদিন একই অভিযোগে গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহিমাগঞ্জ সাব-জোনাল অফিসের পক্ষ থেকেও গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহিমাগঞ্জ সাব-জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মো. মাহমুদুল ইসলাম জানান, গত এক সপ্তাহে মহিমাগঞ্জের একটি তেলের মিল, দুটি স-মিল, ওয়ালন্টন শোরুম এবং এনআরবিসি নামের একটি বেসরকারি ব্যাংকের উপশাখার বৈদ্যুতিক মিটার চুরি করেছে ওই চিরকুট চক্র। এর মধ্যে অনেকেই বিকাশে টাকা পাঠিয়ে ফেরত পেয়েছেন তাদের মিটার। এদের হাত থেকে রক্ষা পেতে সচেতনতার পাশাপাশি মিটার সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন সতর্কতামূলক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে গ্রাহকদের।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম এনআরবিসি ব্যাংকের এজাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, চক্রটিকে ধরতে তৎপরতা শুরু হয়েছে।