ঋণ একটি মানবাধিকার : ড. ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ঋণ একটি মানবাধিকার। কারণ, এটি মানুষের জীবিকার সঙ্গে সম্পর্কিত। গতকাল মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক সম্মেলনের (কপ২৯) এক সাইডলাইন গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, ‘ঋণ পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত না করে আপনি জীবিকার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না।’
সম্মেলনের বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ড যৌথভাবে ‘আ গ্লোবাল কনভারসেশন : অ্যাকসেস টু ফাইন্যান্স ফর স্মল স্কেল ফার্মার্স’ শিরোনামের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়াজ হামিদুল্লাহ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। নেদারল্যান্ডসের জলবায়ু দূত বোরবন-পারমার ডাচ যুবরাজ জেইমি বার্নার্ডোও এতে উপস্থিত ছিলেন।
ডাচ যুবরাজ ঋণ, বিমা, বিনিয়োগ, গবেষণা ও অর্থ কীভাবে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করেছে, তা তুলে ধরে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ কৃষকদের এখন এ সহায়তার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ইভন পিন্টো বলেন, কৃষকরা ঋণ পাওয়ার পর থেকে বিশ্বব্যাপী ধান উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।
ডাচ উদ্যোক্তা উন্নয়ন ব্যাংক এফএমও’র অন্যতম পরিচালক জোরিম শ্রাভেন ঋণের অধিকারের প্রতি নৈতিক সমর্থন দেওয়ার জন্য অধ্যাপক ইউনূসকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘এটি জনগণের জানার অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত।’
ইন্টার প্রেস সার্ভিসের (আইপিএস) জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারহানা হক রহমান ও আইপিএসের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর নোরাম বলেন, ‘বর্তমানে ৫৫০ মিলিয়ন ক্ষুদ্র কৃষক পরিবার সারা বিশ্বের দুই বিলিয়ন মানুষের খাদ্যের জোগান দিচ্ছে।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘কৃষককে ঋণ পাওয়ার সুযোগ দেওয়া হলে তিনি উদ্যোক্তা হতে পারেন। প্রতিটি ব্যবসার জন্য অর্থ ও বিনিয়োগ প্রয়োজন হয়।’
বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণের অগ্রদূত হিসেবে সমাদৃত অধ্যাপক ইউনূস বলেন, কৃষক শুধু ফসল ফলান না, বাজারে বিক্রিও করেন। তাকে ঋণের সুযোগ দেওয়া হলে তিনি অন্য কৃষকের কাছ থেকে ফসল কিনতে এবং তার জীবনযাত্রা উন্নয়নে তা বিক্রি করতে পারেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বের দেশগুলোকে গ্রামীণ ব্যাংকের মডেল অনুসরণ করে ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো উচিত। যাতে, কৃষকদের জন্য ঋণ সহজলভ্য করা যায়। এ কৃষকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী।
‘প্রতিটি দেশে একটি সামাজিক ব্যবসা ব্যাংকিং আইন থাকা উচিত’ উল্লেখ করে ড. ইউনূস প্রশংসা করে বলেন, বর্তমানে সারা বিশ্বের অন্তত ১১০টি বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক ব্যবসাকে একটি কোর্স হিসেবে পড়াচ্ছে।