আদর-ভালোবাসা বুঝার আগেই বাবা হারাল তাজকিয়া
তিন বছরের শিশু তাসকিয়া। দুনিয়ার অনেক কিছু তার এখনও অজানা। বাবার আদর-ভালোবাসা বুঝে উঠার বয়স হয়নি তার। কিন্তু তার আগেই বাবাকে হারাল সে। আর কোনো দিন বাবাকে দেখতে পাবে না।
এদিকে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ইসরাত জাহান তারিন। তাই দেখা হবে না না অনাগত সন্তানের মুখও। তার আগেই ইসকননেতা চিন্নয় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তার করার প্রতিবাদে তাঁর সমর্থকরা কুপিয়ে হত্যা করে সরকারি কৌসুলি আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে (৩০)।
আজ মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে নগরের লালদীঘি এলাকায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভকালে সংঘর্ষের ঘটনায় চাপাতির এলোপাতাড়ি কোপে নিহত হন তিনি। আলিফের বাড়ি দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতী গ্রামে।
আলিফের পরিবার থাকে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদে। আর চট্টগ্রামে আলিফ থাকতেন ব্যাচেলর হিসেবে। সম্প্রতি তিনি চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর নিযুক্ত হন।
জানা যায়, সাত ভাইবোনের মধ্যে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ চতুর্থ। তাঁর কিছু একটা হয়েছে এমন খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান বড় বোন জান্নাত আরা বেগম। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আসরের নামাজের সময় একজন খবর দিয়েছে আমার ভাই সাইফুলের যেন কী হয়েছে। আমার মেয়েটা মেডিকেলে পড়ে। আমি ওকে ফোন দিয়ে বলি যে তোমার মামার কী হইছে একটু দেখতে যাও। পরে মেয়ে আমাকে বলে যে মা মামা তো আর নেই। হাসপাতালে ছুটে এসে দেখি আমার আদরের ভাইটা আর নেই।’
জান্নাত আরা বেগম বলেন, ‘ওর তিন বছরের একটা মেয়ে আছে। ওর স্ত্রী চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ও এখানে একা থাকত। এই বাচ্চা মেয়েটার কী হবে। আমার পরিবার তো শেষ হয়ে গেল। কারা মারল আমার ভাইকে। আমরা এর বিচার চাই। বাড়ি থেকে সবাই রওনা দিয়েছে। এখনও কেউ এসে পৌঁছায়নি। আমরা সবার জন্য অপেক্ষা করছি। আমার ভাই মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আইনজীবী হয়েছিল। আজ আমি আমার এই আইনজীবী ভাইয়ের হত্যাকারীদের বিচার চাই।