গাজীপুরে পোশাককর্মীদের বিক্ষোভ, হামলা-ভাঙচুর
গাজীপুরে এক পোশাক কারখানার শ্রমিকরা আজ বুধবার কর্মবিরতি, বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা হামলা চালিয়ে কারখানার বিভিন্ন মালামালসহ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এ সময় শ্রমিক ও পথচারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক ইসলাম হোসেন জানান, গাজীপুরের বাসন থানার নাওজোর এলাকার দিগন্ত সোয়েটার কারখানার শ্রমিকরা প্রতিদিনের মতো আজ সকালে কাজে যোগ দিতে কারখানায় আসে। এ সময় কারখানার নিটিং সেকশনের চার-পাঁচটি মেশিন ভাঙা দেখতে পায়। শ্রমিকরা মেশিন ভাঙার বিষয়টি জানতে চাইলে কারখানার কর্মকর্তারা এ ঘটনার জন্য উল্টো শ্রমিকদের দায়ী করে ভয়ভীতি দেখায়। এতে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে।
শ্রমিকরা এ ঘটনার প্রতিবাদে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে উত্তেজিত শ্রমিকরা কারখানায় হামলা চালিয়ে মেশিনপত্রসহ বিভিন্ন মালামাল ভাঙচুর শুরু করে। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তারা কারখানা থেকে বের হয়ে পাশের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপর গিয়ে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে।
স্থানীয়রা জানায়, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মিছিলসহ পাশের কোস্ট টু কোস্ট পোশাক কারখানায় যায়। তারা ফটক ভেঙে ওই পোশাক কারখানার ভেতরে ঢুকে কর্মরত শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করে দেয় এবং তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিতে বলে। এ সময় কোস্ট টু কোস্ট পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বহিরাগত কয়েকজনকে আটকে রেখে মারধর করে।
এদিকে সহকর্মীদের মারধরের খবর পেয়ে দিগন্ত সোয়েটার পোশাক কারখানার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কোস্ট টু কোস্ট পোশাক কারখানায় হামলা চালিয়ে ভবনের কাঁচ, আইটি সেকশনের কম্পিউটার, মেশিনপত্র, বিভিন্ন মালামাল ভাঙচুর করে এবং বিভিন্ন নথিপত্র তছনছ করে বাইরে ফেলে দেয়। পরে তারা মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, পিকআপসহ অন্তত ১০টি গাড়ি ভাঙচুর করে। এতে পথচারীসহ ১০ জন আহত হয়। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শ্রমিকদের অভিযোগ, দিগন্ত সোয়েটার কারখানায় গত কয়েকদিন ধরেই জ্যাকার মেশিন বসানোকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের মধ্যে ছাঁটাই আতঙ্ক বিরাজ করছিল। এর জের ধরে কারখানা কর্তৃপক্ষ পরিকল্পিতভাবে মেশিনপত্র তছনছ করেছে। সাজানো এ ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ উল্টো শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার হুমকি দিলে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এতে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে।
জিএমপির বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম ও শিল্প পুলিশের পরিদর্শক ইসলাম হোসেন জানান, দিগন্ত পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে। আলোচনা শেষে শ্রমিকরা আন্দোলন স্থগিত করে অবরোধ তুলে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ওই মহাসড়কে আবার যানবাহন চলাচল শুরু হয়।