এক বছরে বাংলাদেশ ব্যাংকে ৩৯৩০ অভিযোগ, চালু হবে অ্যাপস
২০১৪-১৫ অর্থবছরে আর্থিক অনিয়ম, জালিয়াতি ও হয়রানির শিকার হয়ে গ্রাহকরা বাংলাদেশ ব্যাংকে তিন হাজার ৯৩০টি অভিযোগ করেছে। এ অভিযোগগুলো শতভাগ নিষ্পত্তি হয়েছে বলে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারা জানিয়েছে, গত বছরের তুলনায় এ বছর অভিযোগ কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণের বার্ষিক প্রতিবেদন-২০১৫-তে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আজ রোববার বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স রুমে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। তিনি জানিয়েছেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকদের সঙ্গে অনিয়ম, অনাচার, হয়রানি, দুর্নীতি ও জালিয়াতির নালিশ সহজে জানাতে মোবাইল অ্যাপস তৈরি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এবার বাংলাদেশ ব্যাংকে বেশি অভিযোগ এসেছে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিরুদ্ধে, যা মোট অভিযোগের ৫৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ। রাষ্ট্রায়াত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ২৮ দশমিক ১৩ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের সুবিধাবঞ্চিত, নিম্ন আয়ের এবং স্বল্পবিত্তের মানুষদের ব্যাংকিং সেবার আওতা অনেক গুণ বেড়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গ্রাহকরা ব্যাংকের কাছে আরো আধুনিক, বৈচিত্র্যময় ও আন্তরিক আর্থিক সেবা দিতে হবে।
ফাইন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস বিভাগ সম্পর্কে গভর্নর বলেন, এ বিভাগকে গ্রাহকের দ্বারপ্রান্তে নিতে প্রচারণায় ২৫ হাজার নতুন ডিজাইনের স্টিকার ছাপানো হচ্ছে। স্টিকারগুলো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্যাশ কাউন্টার, এটিএম বুথ ও গাড়িতে লাগানো হবে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে একজন গ্রাহক যাতে তার মোবাইল থেকে তার সমস্যা জানাতে পারে সে লক্ষ্যে একটি অ্যাপস তৈরির কাজ প্রক্রিয়াধীন। তথ্যের অবাধ প্রবাহ সৃষ্টি করতে পারলে হয়রানি অনেকটাই কমে আসবে। গ্রাহকের স্বার্থে কোনো ছাড় নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ব্যাংকের অদৃশ্য চার্জ (হিডেন চার্জ) সম্পর্কে ড. আতিউর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা আছে, গ্রাহককে না জানিয়ে কোনো ব্যাংক কোনো প্রকার চার্জ কর্তন করতে পারবে না। এ ধরনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে সেই ব্যাংকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক এ কে এম আমজাদ হোসেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি গোলাম রহমান এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের সভাপতি আলী রেজা ইফতেখারসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১১ সালের ১ এপ্রিল গঠন করে গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণ কেন্দ্র। পরিধি বাড়ায় ২৫ জুলাই ২০১২ সালে গঠন করা হয় ফাইন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস বিভাগ (এফআইসিএসডি)।
ফ্যাক্স (০০৮৮-০২-৯৫৩০২৭৩), ই-মেইল ([email protected]), এসএমএস এবং ১৬২৩৬ নম্বরে ডায়াল করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কোনো অনিয়ম ও হয়রানির বিরুদ্ধে গ্রাহকরা অভিযোগ করতে পারেন। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য এ সেবা চালু করা হয়।