একটিতে চীন বাদ, আরেকটি পাচ্ছে ভারত!
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের নির্মাণকাজ পেতে যাচ্ছে ভারত। এটি হলে দুই দেশের বন্ধন নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে মনে করছে নয়াদিল্লি। আজ সোমবার ভারতের গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ও জি নিউজের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পায়রায় নতুন গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে নয়াদিল্লি উন্মুখ হয়ে আছে। এরই মধ্যে সোনাদিয়া বন্দরের নির্মাণে চীনের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে বাংলাদেশ। এসব বিষয়ই দুই দেশের মধ্যকার দৃঢ় বন্ধনের ইঙ্গিত দেয়।
জি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন সোনাদিয়া থেকে বাদ পড়েছে। আর পায়রায় বন্দর নির্মাণের কাজ পেতে যাচ্ছে ভারত। এটি ভারতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি হলে দুই দেশের বন্ধন নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।
চীনসহ দশটি দেশের কোম্পানি পায়রার কাজ পাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। মূলত পায়রার কাজ পাওয়ার মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে চীনের সহজ প্রবেশাধিকার ঠেকাতে চায় ভারত। আর কক্সবাজারের মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের কাজের প্রত্যাশা করছে জাপান।
সোনাদিয়া সমুদ্রবন্দর প্রকল্প নিয়ে চীনের সমঝোতা কৌশলগতভাবে বাংলাদেশ ভণ্ডুল করেছে। এটি সন্দেহাতীতভাবে ভারত, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভালো হবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
পায়রা সমুদ্রবন্দর সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশের। এর সম্ভাব্যতা যাচাই করছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের কোম্পানিগুলো পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ বন্দর নির্মাণে চীনের কোম্পানিগুলোকেও বাংলাদেশ আহ্বান করেছে। অন্তত দশটি দেশের কোম্পানি এই বন্দর নির্মাণে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে সোনাদিয়া প্রকল্পের কাজের সুযোগ হারানো পর পায়রা প্রকল্পের কাজ পাওয়ার ফন্দি আটছে চীন।
জাতীয় প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সমুদ্রবন্দরগুলোর কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে চায় বাংলাদেশ সরকার। এ লক্ষ্যে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নে রাবনাবাদ চ্যানেলের তীরে পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর দেশের বন্দরের ব্যবহার ১২ শতাংশ হারে বাড়ছে। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন একটি বন্দর নির্মাণ জরুরি হয়ে উঠেছে।
বর্তমানে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে যে আকারের জাহাজ আসতে পারে, এর চেয়ে বড় জাহাজ সরাসরি পায়রা বন্দরে ভিড়তে পারলে লাভবান হবে অর্থনীতি।
এ পরিপ্রেক্ষিতে দুটি বন্দরের সমান্তরালে দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর হিসেবে পায়রা বন্দর প্রকল্পকে অগ্রাধিকার তালিকায় রেখেছে সরকার।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ‘পায়রা বন্দর অধ্যাদেশ-২০১৩’ সংসদে পাস হয়। একই বছরের ১৯ নভেম্বর প্রস্তাবিত পায়রা বন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের নির্মাণকাজ ২০১৮ সালের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।