ফিলিপাইনের ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে হ্যাক করে বাংলাদেশের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) শাখা ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আজ শুক্রবার ফিলিপাইনের অনলাইন পত্রিকা ইনকোয়েরার জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ হ্যাকিংয়ের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করেছে ফিলিপাইন। পত্রিকাটি আরো জানায়, হ্যাকার গ্রুপটি দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন কর্মকর্তার ওপর নজর রাখছিল। আর সব বুঝেশুনেই তারা হ্যাকিংয়ের জন্য বেছে নেয় শুক্রবারের দিনটি।
আরসিবিসির ওই শাখা ব্যবস্থাপকের নাম মাইয়া সান্তোস দেগিতো। আরেক সন্দেহভাজন ফিলিপাইনের ব্যবসায়ী উইলিয়াম গো। তাঁর অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেই এ হ্যাকিংয়ের বিষয়টি ঘটানো হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে তাঁর আইনজীবী র্যামন এসগেরা বলছেন, তাঁর মক্কেলের সই জাল করে অর্থ পাচার করা হয়েছে।
ইনকোয়েরারের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে ডলার আকারে অর্থ নেওয়ার পর তা স্প্যানিশ মুদ্রা 'পেসো'তে পরিণত করে 'ফিলেরম' নামে একটি রেমিট্যান্স প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।
এ ঘটনায় জড়িত থাকলে ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের ওই শাখার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির প্রেসিডেন্ট লরেঞ্জো ট্যান।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভে রাখা বাংলাদেশের রিজার্ভ থেকে চায়নিজ একটি গ্রুপ হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে শ্রীলংকা ও ফিলিপাইনে ১০১ মিলিয়ন (১০ কোটি ১০ লাখ) ডলার সরিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকও স্বীকার করে, অর্থ স্থানান্তরের পরামর্শ বার্তা তাদের কাছে আসে। এর পর সঙ্গে সঙ্গেই বার্তাটি অসত্য বলে পাঠানো হয় ফেডারেল রিজার্ভে। কিন্তু তার আগেই বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে ফিলিপাইনের আরসিবিসির একটি অ্যাকাউন্টে অর্থ স্থানান্তর হয়ে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ইনকোয়েরার বলছে, এ ঘটনায় কারা জড়িত রয়েছে, তা বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্ধার করতে পেরেছে। হ্যাকার গ্রুপটি দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন কর্মকর্তার ওপর নজর রাখছিল বলে জানা গেছে। আর সব বুঝেশুনেই তারা হ্যাকিং জন্য বেছে নেয় শুক্রবারের দিনটি।
এদিকে, ফিলিপাইনের অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং কাউন্সিল (এএমএলসি) একটি আন্তসীমান্ত ইলেকট্রনিক জালিয়াতির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ছয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।
ইনকোয়েরারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আটক ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনে নিজস্ব ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এগুলো ব্যবহার করেই একটি আন্তর্জাতিক চক্র চোরাই অর্থ ফিলিপাইনে পাঠিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কম্পিউটার হ্যাকাররা যুক্তরাষ্ট্রের একটি ব্যাংক হিসাবে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই অর্থ চুরি করেছিল। পরে সেই অর্থ ফিলিপাইনের একাধিক ক্যাসিনোতে পাওয়া যায়।