বন্ধুকে দায়ী করলেন শ্রীলঙ্কার ব্যবসায়ী
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া অর্থের একটি অংশ শ্রীলঙ্কার এক নারী ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্টে যায়। তবে অর্থছাড় হওয়ার আগেই বিষয়টি ধরা পড়ে। হাগোদা গোমেজ শালিকা পেরেরা নামের ওই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী চুরি যাওয়া অর্থ লেনদেনে তাঁর অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের জন্য এক বন্ধুকে দায়ী করেছেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া ১০ কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে দুই কোটিই যায় শালিকা ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে। ওই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার শালিকা পেরেরা। অর্থ অ্যাকাউন্টে এলেও তা তুলতে পারেননি পেরেরা। প্রতিষ্ঠানের নামের বানান জটিলতায় আটকে যায় ওই লেনদেন। তবে বাকি আট কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার ফিলিপাইনের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে চলে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, শালিকা ফাউন্ডেশন লেখার সময় ফাউন্ডেশন বানানটি ভুল ছিল। মধ্যবর্তী একটি ব্যাংক তাদের কাছে নামের বানান নিশ্চিত হতে যায়। অর্থ লেনদেনের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
শালিকা পেরেরা রয়টার্সকে বলেন, জাপানের উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা জাইকার কাছ থেকে দুই কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা আশা করছিলেন তিনি। তাঁর এক বন্ধু জাইকার সহায়তার জন্য বিভিন্ন নথি তৈরি করে নেন এবং যথাসময়ে সহায়তা যাবে বলে আশ্বস্ত করেন। তাই ব্যাংককেও বিষয়টি জানিয়ে রেখেছিলেন পেরেরা। যথাসময়ে অর্থ গেলেও তা জাইকা থেকে নয়, বরং বাংলাদেশের বিদ্যুৎবিষয়ক এক সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে যায়। তবে পেরেরার দেওয়া মোবাইল ও ই-মেইল ঠিকানার মাধ্যমে ওই বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি রয়টার্স। শ্রীলঙ্কার অপরাধ তদন্ত বিভাগ শালিকা পেরেরার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
এদিকে, জাইকার মুখপাত্র নাওউকি নেমাটো বলেন, শালিকা ফাউন্ডেশনের সহায়তার বিষয়ে কোনো নথি তাঁদের কাছে যায়নি।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে সঞ্চিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার (প্রায় ৮০৮ কোটি টাকা) চুরি হয়। এর মধ্যে আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় প্রবেশ করে। এই অর্থছাড় হয় আরসিবিসি ব্যাংকের ম্যানেজার মায়া সান্তোস দেগুইতোর হাত দিয়ে। এ ঘটনায় ফিলিপাইনের সিনেটে মায়া সান্তোস দেগুইতো ও ফিলিপাইনের ব্যবসায়ী কিম অংয়ের শুনানি চলছে। চুরি যাওয়া অর্থের মধ্য দুই কোটি ডলার শালিকা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠানের নামে পাঠানো হয়। তবে নাম জটিলতায় লেনদেন সম্পন্ন করা হয়নি।