ঈদে লেনদেন ২ লাখ কোটি টাকা
প্রতিবছরের মতো এবারের ঈদে সবারই ছিল বাড়তি কেনাকাটার চাপ। রমজানজুড়ে সেহরি, ইফতার ও আপ্যায়ন বাবদ অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হয়ে থাকে। সবমিলিয়ে এবার রোজায় বিভিন্ন ধরনের কেনাকাটায় সারাদেশে অতিরিক্ত প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির নিজস্ব উদ্যোগে পরিচালিত এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
সমীক্ষা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঈদ কেন্দ্র করে প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়। তবে, এ বছর মূল্যস্ফীতির কারণে সবধরনের পণ্য ও সেবার দাম অতিরিক্ত ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে। দাম বাড়ার কারণে আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার কেনাকাটা কম হয়। এতে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ঈদ কেন্দ্রিক লেনদেন বেড়েছে পাঁচ শতাংশের মতো। টাকার অঙ্কে পরিমাণ দাঁড়ায় এক লাখ ৯৬ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা।
তথ্যমতে, চলতি বছর ঈদ কেন্দ্রিক লেনদেনে মার্কেটে এক লাখ ৮৭ হাজার ৬৬০ কোটি টাকার যে অতিরিক্ত টাকা ঢুকেছে, তার মধ্যে জাকাতের টাকা রয়েছে ৭০ হাজার ১২৫ কোটি। পোশাক কেনাকাটায় অতিরিক্ত ব্যয় হয় ৩৪ হাজার কোটি টাকা। সর্বনিম্ন ব্যয় আট হাজার টাকা ধরে দেশে প্রায় চার কোটি পরিবারের মধ্যে ২৫ ভাগ মানুষের কেনাকাটায় এই ব্যয় হয়। এ ছাড়া মোট ১৭ কোটি জনসংখ্যার ৪০ শতাংশকে রোজাদার ধরে এবং জনপ্রতি ৪০ টাকা ব্যয় ধরে রমজানে ইফতার ও সেহরি বাবদ ব্যয় হয়েছে আট হাজার ১৬০ কোটি টাকা।
সারাদেশে ৭০ লাখ লোক ঈদে বাড়ি গেছে এমন তথ্য ধরে, গাড়ি ভাড়াবাবদ সাত হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়। অতিরিক্ত খাদ্য ব্যয় হয় গড়ে ছয় হাজার টাকা। এক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ রোজাদার হিসেবে চার কোটি ২৫ লাখ লোকের জন্য এবার খাদ্য বাবদ অতিরিক্ত ব্যয় হয় ২৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। বিনোদনে এবার ব্যয় ধরা হয় চার হাজার ৬৭ কোটি টাকা। ঈদের চাহিদা পূরণের জন্য পাঁচ হাজার ৫০০ কোটি টাকার গার্মেন্ট পণ্য আমদানি করা হয়।
ঈদের চাহিদা পূরণের জন্য পাঁচ হাজার ৫০০ কোটি টাকার গার্মেন্টস পণ্য আমদানি করা হয়। পোশাকের দোকানে যেখানে সাধারণ সময়ে প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার পাঞ্জাবী, সালোয়ার কামিজ প্রভৃতি বিক্রয় হয়। সেখানে ঈদের আগে গড়ে প্রতিদিন ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রয় হয়। একটি অলঙ্কার দোকানে যেখানে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকার অলংকার প্রতিদিন বিক্রয় হয়। সেখানে রোজার মাসে বিশেষ করে ঈদের আগে প্রতিদিন প্রায় দুই লাখ থেকে তিন লাখ টাকার অলঙ্কার বিক্রয় হয়। ঈদের আগে বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংক সমূহকে ছয় থেকে সাত হাজার কোটি টাকা সরবরাহ করে থাকে তারল্য ধরে রাখার জন্য।