বকেয়া বিল পরিশোধ নিয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চায় আইএমএফ
দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভর্তুকি কমানো এবং দামের সমন্বয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধি দল।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২ মে) ক্রিস পাপাজর্জিওর নেতৃত্বে আইএমএফের প্রতিনিধি দলটি বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রথম বৈঠক করে। এরপর জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সঙ্গে এবং শেষে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন পেট্রোবাংলার সঙ্গে বৈঠকে বসে দলটি।
তবে বৈঠকে আলোচিত বিষয়গুলো নিয়ে কেউই কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভাগের বৈঠকে নেতৃত্ব দেন বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান। বৈঠকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান মাহবুবুল রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন।
এ বিষয়ে হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বৈঠকের ফলাফল নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে বৈঠকে আলোচিত বিষয়গুলো নিয়ে মন্তব্য করা সত্যিই কঠিন।’
আইএমএফের সঙ্গে বৈঠকের ফলাফল প্রকাশ করতে অন্যান্য কর্মকর্তারাও অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মূলত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভর্তুকি কমানো এবং বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম সমন্বয়ের বিষয়টি আইএমএফের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে। আইএমএফ প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার অনিষ্পন্ন বিল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই বকেয়া বিলগুলো পরিশোধের জন্য সরকারের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছে।
অর্থনীতি ও অন্যান্য খাতে সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন পর্যালোচনার উদ্যোগের অংশ হিসেবে আইএমএফের প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ সফর করছে। ইতোমধ্যে অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে পেট্রোলিয়াম জ্বালানিতে স্বয়ংক্রিয় মূল্য সমন্বয় ব্যবস্থা চালু করেছে সরকার। এ ছাড়াও ভর্তুকি ও আর্থিক ক্ষতি কমাতে বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। কিন্তু তারপরও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সরকারের ব্যয় ও আয়ের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান রয়েছে। ফলে এ খাতের আর্থিক ক্ষতি পোষাতে বড় ধরনের ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।
সূত্র জানায়, আইএমএফ লোকসান কমাতে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর জন্য সরকারকে ক্রমাগত তাগাদা দিয়ে আসছে।
বাংলাদেশ আইএমএফের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের বেশ কয়েকটি কিস্তি পেয়েছে এবং এখন প্রায় ৬৯ কোটি ডলারের পরবর্তী কিস্তি পাওয়ার আশা করছে।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে, সরকার অর্থনৈতিক সংস্কার চালাতে রাজি হওয়ার পরে ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারের উদ্বোধনী কিস্তি দিয়েছিল আইএমএফ। এরপর রাজস্ব ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উভয়ই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম থাকার পরও ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ৬৯ কোটি ডলার মূল্যের দ্বিতীয় কিস্তি প্রদান করে আইএমএফ।