শক্তিশালী তামাক কর অকালমৃত্যু রোধ করবে, রাজস্ব বাড়বে
তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে শক্তিশালী ও উচ্চমাত্রার তামাক কর জরুরি। এটা বাস্তবায়ন হলে ১০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় বাড়বে। পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে এগার লাখের বেশি মানুষের অকালমৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ, সাংবাদিকসহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
আজ বুধবার (২২ মে) প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্সের (আত্মা) আয়োজিত “তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে শক্তিশালী তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা” শীর্ষক ভার্চুয়াল বৈঠকে এসব বিষয় উঠে আসে।
বর্তমান করকাঠামো তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে, তেমন কোন অবদান রাখতে পারছে না জানিয়ে তারা আসন্ন ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে কার্যকর তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ বাস্তবায়নের দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, চিনি, আলু, আটাসহ বেশকিছু নিত্যপণ্যের দাম ২০২১ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ৪০ শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু একই সময়ে তামাকপণ্যের দাম বেড়েছে ৬ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত। ত্রুটিপূর্ণ কর ও মূল্য পদক্ষেপই এজন্য দায়ী। তারা বলেন, প্রস্তাবিত তামাক কর ও মূল্য প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে ১০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে। একই সাথে দীর্ঘমেয়াদে প্রায় পাঁচ লাখ তরুণসহ মোট এগার লাখের অধিক মানুষের অকালমৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে।
বৈঠকে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, “তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে শক্তিশালী তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপের কোন বিকল্প নেই। আশা করি, এবারের প্রস্তাবগুলো সরকার আমলে নেবে।”
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মাহফুজ কবীর বলেন, “নিম্নস্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৪৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০ টাকা নির্ধারণ করে কমপক্ষে ৬৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করতে হবে। এতে রাজস্ব আয় বাড়বে এবং তরুণরা সিগারেট ব্যবহারে বিশেষভাবে নিরুত্সাহিত হবে।”
আলোচনা সভায় অংশ নেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের বাংলাদেশ লিড পলিসি অ্যাডভাইজর মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার (এনসিডি) ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হক, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী এবং একাত্তর টেলিভিশনের হেড অব ন্যাশনাল মো. মনির হোসেন লিটন। আত্মার কো-কনভেনর নাদিরা কিরণের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেন আত্মার কনভেনর মর্তুজা হায়দার লিটন, প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের, আত্মার সাংবাদিকসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের নেতারা।