ইন্টারনেট বন্ধ
ই-কমার্স খাতে ১৩ দিনে ক্ষতি ১৭০০ কোটি টাকা
ইন্টারনেট ও ফেসবুক বন্ধ রাখায় এই ই-কমার্স খাতে গত ১৩ দিনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৭‘শ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। যেখানে প্রথম ১০ দিনেই ক্ষতি হয়েছে এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা এমনটাই জানালেন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সভাপতি শমী কায়সার।
গতকাল বুধবার বিকেলে ই-কমার্স অ্যাসোসিশেন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ক্ষয়ক্ষতির অঙ্ক এবং সংকট উত্তরণে কয়েকটি দাবি ও পরামর্শ তুলে ধরেন তিনি।
শমী কায়সার বলেন, শুরুতেই ইন্টারনেট ও ফেসবুক খুলে দেয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ। তবে গত ১৩ দিনে এই খাতে প্রায় ১৭‘শ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে প্রতিদিন তার পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে এই ব্যবসা পুরোই বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে ইন্টারনেট চালু থাকলেও গতি কম থাকায় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক বন্ধ থাকার কারণে এখনো সংকট কাটিয়ে উঠেনি। এ ছাড়া কারফিউ ও নিরাপত্তা ঝুঁকিসহ বিভিন্ন কারণে ই-কমার্স খাতের ৯৫% শতাংশ লেনদেন এখনো বন্ধ রয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, ই-ক্যাব থেকে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য জরিপ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। শমী কায়সার বিগত কয়েকদিন ধরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট, মোবাইল ইন্টারনেট ও ফেসবুক চালু করার জন্য ই-ক্যাব থেকে যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা তুলে ধরেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা কেউ এর জন্য প্রস্তুত ছিলাম না এবং পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
ইন্টারনেট চালু ও ফেসবুক খুলে দেয়া ছাড়াও ই-ক্যাব নেতৃবৃন্দ সরকারের নিকট তাদের দাবি প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন। যেসব উদ্যোক্তার ব্যাংক ঋণ রয়েছে তা পরিশোধের সময়সীমা নূন্যতম ছয় মাস বৃদ্ধি করা, সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করা, লজিস্টিকস ও ডিজিটাল মার্কেটিং এর সাময়িকভাবে ভ্যাট মওকুফ করা, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ফি মওকুফ ও মেয়াদ বৃদ্ধি করার দাবী জানান।
এ ছাড়া ফেসবুকে সচল থাকা বিজ্ঞাপনের মূল্য ফেরত বা পূণবিজ্ঞাপনের জন্য ফেসবুকের সাথে যোগাযোগ করার জন্য সরকারকে পরামর্শ দেন। তাদের সংগঠন-ও ফেসবুকের সাথে যোগাযোগ করবেন বলেও জানান শমি কায়সার।
এদিন বিকেলে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া এই প্রেসমিটে সভাপতি বলেন, বাংলাদেশে ২০ লাখ উদ্যোক্তা ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল। শুধু ফেসবুকভিত্তিক উদ্যোক্তা রয়েছেন পাঁচ লাখেরও বেশি। তারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এফ কমার্স খাতে নারী উদ্যোক্তরা অনেক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে বলেন জানিয়েছেন, ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক নাছিমা আক্তার নিশা। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পাঁচ লাখ নারী-পুরুষ এফ-কমার্সে কাজ করছেন। তারা সবাই এখন আর্থিক ক্ষতির মধ্যে দিয়ে গেছে। এটি কাটিয়ে উঠতে বেশ বেগ পোহাতে হবে। আমার তাদের নির্ভরতা কমিয়ে- সবার ডাটা সংগ্রহ করে, একটু সময় নিয়ে তাদের ডিজিটালি ট্রান্সফার করতে কাজ করব।
চলমান সংকটে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকা ও অন্যান্য কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত ই-কমার্স খাতের ক্ষয়ক্ষতি ও বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে তা থেকে উত্তরণে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন এই খাতের উদ্যোক্তারা।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, ই-ক্যাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাহাব উদ্দিন শিপন, সহ-সভাপতি সৈয়দা আম্বারীন রেজা, সহ সাধারণ সম্পাদক খন্দকার তাসফিন আলম, অর্থ সম্পাদক আসিফ আহনাফ, পরিচালক শাহারিয়ার হাসান, মো. সাইদুর রহমান সাঈদ, মো. ইলমুল হক সজীব ও অর্ণব মুস্তাফা উপস্থিত ছিলেন।