‘যানজটে আমার স্বপ্ন শেষ ভাই’
‘আমার সব শেষ হয়ে গেছে ভাই। আমার বাবা মায়ের এত দিনের স্বপ্ন যানজট শেষ করে দিল। যানজটের কারণে “ই” ইউনিটের সকালের শিফটের পরীক্ষায় আমি অংশ গ্রহণ করতে পারিনি। বিকেলে আমার আরেকটা শিফটের পরীক্ষা আছে, সেটাও ঠিক মতো দিতে পারব কি না বুঝতে পারছি না।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার অংশ নিতে আসা মো. আরিফ কান্নাজড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলেন।
আরিফের মতোই হাজারো শিক্ষার্থী যানযটের কারণে ‘ই’ ইউনিটের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে দীর্ঘ ৪০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটকেই দায়ী করছেন তাঁরা। অব্যাহত বৃষ্টিপাত ও চলমান রাস্তা সংস্কারের জন্য গতকাল শনিবার থেকে সৃষ্টি হয় এ যানজট।
আরিফ বলেন, ‘আমি ঢাকা থেকে রাত ১০টায় বাসে উঠি। সকাল ৯টায় এখন আমি এখনো সিরাজগঞ্জে আছি। শুধু আমি নই। আমাদের বাসে আরো ২০ জন আছে যারা রাবিতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে। তাদেরও একই অবস্থা।’
ময়মনসিংহ থেকে আসা আরেক শিক্ষার্থী আহসান উল্লাহ বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটে গাড়ি থেকে নেমে তাড়াহুড়া করে দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবনের পরীক্ষা দিতে যাই। নির্দিষ্ট সময় থেকে আমার পরীক্ষার হলে পৌঁছাতে পাঁচ মিনিট দেরি হওয়ায় আমাকে পরীক্ষায় বসতে দেয়নি।’
সরেজমিনে যানজটের কারণে পরীক্ষা দিতে পারেনি এ রকম প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীকে দেখা যায়। তাদের প্রত্যেকের অভিযোগ, যানজটের কারণে তাঁরা পরীক্ষা দিতে পারেননি। এতে কেউ কেউ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। ফলে অন্য শিফটের পরীক্ষাও ভালোভাবে দিতে পারবেন না বলে জানান অনেকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, ‘আমরা পরীক্ষার হলে দেখেছি ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়েছে। হয়তো রাস্তায় অল্পসংখ্যক আটকে আছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কিছু করার থাকে না।’
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘পরীক্ষা যথা সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। যারা যানজটের কারণে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি তাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া আমাদের আর কিছু করার নেই।’