উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বিজ্ঞান ভবনের তৃতীয় তলায় বিভাগের স্থান বরাদ্দকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়ী করেছেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকরা।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিজ্ঞান ভবনের করিডরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শরীফ উদ্দিন এবং ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সহকারী অধ্যাপক মাজেদা ইসলাম। এ সময় দুটি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শরীফ উদ্দিন বলেন, এরই মধ্যে বিভাগের নিজস্ব তহবিল থেকে ভবনের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় ল্যাবরেটরি ও শ্রেণিকক্ষে ফাইবার অপটিক, ইন্টারনেট সংযোগ ও নেটওয়ার্ক স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংযোগ করা হয়েছে।
ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাজেদা ইসলাম বলেন, ভূতাত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ক্লাসরুম এবং ল্যাবের জায়গা সংকটের কথা বিবেচনা না করে ভবনের তৃতীয় তলায় পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগকে বরাদ্দ দেওয়ায় এই সংকট তৈরি হয়েছে।
শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, এ দুই বিভাগের কাউকে না জানিয়ে রোববার এ-সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশের মাধ্যমে পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগকে ভবনের উত্তর ও দক্ষিণ ব্লকের তৃতীয় তলা হস্তান্তরের অনুমোদন দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে এ সংকটময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সিন্ডিকেটের নির্দেশ
এদিকে নতুন ভবনের স্থান বরাদ্দ নিয়ে তিন বিভাগের পাল্টাপাল্টি অবস্থানরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ৫ এপ্রিলের পূর্বাবস্থায় ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।
মঙ্গলবার বিকেলে প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য এবং কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক সৈয়দ মো. কামরুল আহছান এনটিভি অনলাইনকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
এ ছাড়া সুষ্ঠু একাডেমিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনার জন্য সিন্ডিকেট সদস্য ও মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আলাউদ্দিনকে প্রধান করে একটি সুপারিশ কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সদ্স্য সচিব করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অফিসের পরিচালক এস এম আনোয়ারুল ইসলামকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক তোফায়েল আহমদ চৌধুরী, অধ্যাপক রাশেদা আখতার এবং গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. নুরুল হক।
এদিকে গত ৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জারি করা অফিস আদেশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় তা প্রশাসনের ব্যর্থতা কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবুল হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘অফিস আদেশ বাতিল করা হয়নি। বরং সিন্ডিকেট এর প্রশংসা (এপ্রিশিয়েট) করেছে।’
সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এ এন এম ফখরুদ্দিন বলেন, ‘আমরা এতে হতাশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের উঠিয়ে দেওয়া না পর্যন্ত আমাদের অবস্থান অব্যাহত থাকবে।’
অন্যদিকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে আমাদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাব।’