শিক্ষার্থীদের পেটানোর পর অনশনে জবি ছাত্রলীগ!
পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আবাসিক হল নির্মাণের দাবিতে চলমান আন্দোলনে হামলা চালিয়ে এবার অনশনে বসেছে ছাত্রলীগ। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে অনশন কর্মসূচি পালন করেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
একই দাবিতে আজ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ করা হয়।
এদিকে উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয় এ রকম কর্মসূচি থেকে সরে আসতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তিন ঘণ্টার অনশনে বসে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওই অনশনে দেখা যায়নি।
এদিকে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সকাল ১০টা থেকে ছাত্র মহাসমাবেশ করে। ধর্মঘটের কারণে কোনো বিভাগে ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।
গত রোববার ও সোমবার পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ছাত্র ধর্মঘটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভের চেষ্টা করে। এ সময় ছাত্রলীগও পৃথকভাবে অবস্থান নেয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আন্দোলনে আসতে বলে তারা। শিক্ষার্থীরা তাদের নেতৃত্বে যেতে না চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালায় এবং পিটিয়ে আহত করে। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। তাদের হামলার ভিডিও ও স্থিরচিত্র বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লেও হামলার বিষয়টি ছাত্রলীগ নেতারা অস্বীকার করেন।
ছাত্রলীগের হামলায় আহত এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘নেতৃত্বের দখল নিতে চেয়েছিল ছাত্রলীগ। কিন্তু তাদের ফ্লোর না দেওয়ায় তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়।’
নেতৃত্ব না দিতে চাওয়ার কারণ জানতে চাইলে ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘এর আগে ২০১৪ সালে হল বিষয়ে আন্দোলন হয়েছিল, সেখানে নেতৃত্ব দিয়েছিল শরীফ-সিরাজ ছাত্রলীগ। কিন্তু পরে আমরা জানতে পারি হাজি সেলিমের কাছ থেকে ছাত্রলীগ সভাপতি শরীফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম টাকা খেয়েছেন। যে কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না।’
জবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি এবং আমরা সফলতা পাব। ইতিহাসে কোনোদিন বামপন্থী, গাঁজাখোর, মদখোর এদের পেছনে আন্দোলন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপকৃত হয়নি, হবে না। সফলতা আনতে পারবে না। একমাত্র ছাত্রলীগ বাংলাদেশে সব সফলতা আনার ক্ষমতা রাখে। আমরাই পারব। সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেয়।’
জবি সাংবাদিক সমিতির বিবৃতি
এ দিকে সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে ভাঙচুর ও লুটপাট এবং কার্যালয়ে রাখা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি অবমাননার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জবি সাংবাদিক সমিতি। আজ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানানো হয়। পাশাপাশি ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দিতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছে জবি সাংবাদিক সমিতি।