রাবিতে কর্মকর্তাদের চাকরির বয়স দুই বছর বাড়ল
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কর্মকর্তাদের চাকরির বয়সসীমা ৬০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৬২ বছর করা হয়েছে। আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের ২১তম অধিবেশনে কর্মকর্তাদের চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধির প্রস্তাবটি পাস করা হয়েছে। সিনেট অধিবেশনে সব মিলিয়ে ১০টি প্রস্তাব পাস ও পরিবর্তন করা হয়।
এর আগে আজ সোমবার সকাল ৯টায় জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এ অধিবেশন শুরু হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহ্ম্মদ মিজান উদ্দিনের সভাপতিত্বে সিনেটের উদ্বোধনী অধিবেশন শুরু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ছাদেকুল আরেফিন এনটিভি অনলাইনকে জানান, এই সভায় অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে ইনস্টিটিউট অব ইংলিশ অ্যান্ড আদার ল্যাংগুয়েজেস প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব, ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ), ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইইআর) এবং ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেসের (আবিএসসি) কয়েকটি ধারা-উপধারা সংশোধন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজ অধ্যাদেশ-২০১৫ কে দ্বাদশ সংবিধি করা, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত-কর্মকর্তাদের চাকরির বয়সসীমা ৬০ বছর থেকে ৬২ বছরে উন্নীত করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ তহবিল সংক্রান্ত ধারা সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। এ ছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদনও অনুমোদন করা হয়েছে।
অধ্যাপক ছাদেকুল আরেফিন আরো জানান, সিনেটের এই সভায় ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের ২৭০ কোটি ৮০ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেট এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরের ২৯৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা মূল বাজেট প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সায়েন উদ্দিন আহমদ এই বাজেট পেশ করেন।
১৪ বছর পর রাবিতে সিনেট অধিবেশন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ সিনেটের অধিবেশন (২০তম) বসেছিল ২০০১ সালের ২৮-২৯ জুন তারিখে। দীর্ঘ ১৪ বছর বন্ধ থাকার পর আজ সিনেটের ২১তম অধিবেশন বসে। দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন না হওয়ায় সিনেটের রেজিস্ট্রার্ড গ্রাজুয়েট ক্যাটাগরির ২৫টি পদ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। রাকসু নির্বাচন না হওয়ায় শূন্য রয়েছে ছাত্র প্রতিনিধির পাঁচটি পদ। স্পিকার কর্তৃক মনোনীত পাঁচজন সংসদ সদস্য সিনেটের সদস্য থাকার কথা থাকলেও তা শূন্য রয়েছে।
দীর্ঘদিন সিনেটের রেজিস্ট্রার্ড গ্রাজুয়েট নির্বাচন না হওয়ায় আগের নির্বাচিতদের মধ্যে যাঁরা জীবিত আছেন তাঁদের এবং সিনেটের অন্যান্য ক্যাটাগরির সদস্যদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ মেনেই এবারের সিনেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
অধিবেশনের শুরুতে রীতি অনুযায়ী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক আচার্য ও রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানসহ ২০০১-২০১৫ সাল পর্যন্ত দেশ বরেণ্য ব্যক্তিদের মৃত্যুতে শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করা হয় এবং তাঁদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর সিনেটের ২১তম অধিবেশনের সভাপতি অধ্যাপক মুহ্ম্মদ মিজান উদ্দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সিনেটর ও আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। দিনব্যাপী মোট চারটি অধিবেশনে মোট ১০টি প্রস্তাব পাস ও পরিবর্তন আনা হয়।
অধিবেশনে সভাপতির ভাষণে উপাচার্য মুহম্মদ মিজান উদ্দিন বলেন, 'নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে শিক্ষাসহ সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশে উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও এ ধারা লক্ষণীয়। শিক্ষাক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অপরিসীম আগ্রহ আর আন্তরিকতায় শিক্ষাঙ্গনগুলোতে দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।'
উপাচার্য আরো বলেন, ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী প্রতিবছরে অন্তত একবার সিনেট সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও অনিবার্য কারণে তা সম্ভব হয়নি। ১৪ বছরের দীর্ঘ ব্যবধানের পর আজকের এই সিনেট সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই দীর্ঘ সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নানা ঘটনাপ্রবাহ, আয়োজন, অর্জন, সাফল্য আর ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে। উপাচার্য তাঁর ভাষণে বিগত ২০০১ সালের সিনেট অধিবেশন থেকে বর্তমান ২০১৫ সালের সিনেট অধিবেশন পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।