বহিষ্কৃতরা যাতে ফিরে না আসতে পারে সে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পহেলা বৈশাখে সংঘটিত ছাত্রী নিপীড়ন, ছিনতাই ও মারধরের অপরাধে আজীবন বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা কোনো আইনি পদক্ষেপ নিলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের পক্ষে আইনি লড়াই করে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি এমন দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আজ রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক লাউঞ্জে ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থী ঐক্য মঞ্চ’-এর ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বিভিন্ন সময় শাস্তি হলে শাস্তিপ্রাপ্তরা আদালতে গিয়ে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসে। তাই আজীবন বহিষ্কার যেন নিছক কৌশল না হয়ে দাঁড়ায়, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রায়হান রাইন। তিনি বলেন, যৌন নিপীড়নের ঘটনাকে পাশ কাটিয়ে লাঞ্ছনা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা নিঃসন্দেহে ঘটনার গুরুত্বকে দুর্বল করেছে এবং অভিযুক্তদের নিষ্কৃতি পাওয়ার পথ সুগম করেছে। যৌন নিপীড়নের ঘটনাকে লাঞ্ছনা বলে উপস্থাপন করা অভিসন্ধিমূলক।
একই সংবাদ সম্মেলনে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন বলেন, ‘অপরাধীরা যদি আদালতে রিট করে এ বহিষ্কারাদেশের ওপর স্থগিতাদেশ আনতে চেষ্টা করে, সে ক্ষেত্রে আদালতে শাস্তির পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে তা বহাল রাখার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।’
ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক দিপাঞ্জন সিদ্ধান্ত কাজল বলেন, নিশ্চয়ই এ শাস্তি প্রদানের পেছনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে কিছু যুক্তি রয়েছে। প্রশাসনকেই সেই যুক্তিগুলো প্রয়োজন মতো আদালতে উপস্থাপন করতে হবে। এই আজীবন বহিষ্কারাদেশ যেন শাস্তির চেয়ে কৌশল হিসেবেই উপনীত না হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা আরো যেসব দাবি জানান তার মধ্যে রয়েছে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে, বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের বিভাগে অফিস আদেশ প্রেরণ করতে হবে যাতে ওই শিক্ষার্থীরা ক্লাস বা পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারে, বহিষ্কৃতদের ফৌজদারি আইনে সোপর্দ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দর্শন বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ নিজার আলম, ইতিহাস বিভাগের আনিছা পারভীন, নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের রেজওয়ানা করিম প্রমুখ।